অামার স্বামী যখন পাশের গ্রামের মহিলার সাথে অনৈতিক কার্যকলাপ করতে গিয়ে ধরে পড়লো সেদিনই এমন সব ঘটনা জানতে পারলাম যা শুনে অামার মাথা রীতিমতো চক্কর দিচ্ছিল। ওই মহিলাকে নাকি উনি ১২হাজার টাকার দামের টাচ্ ফোন কিনে দিয়েছে, অথচ অামাদের বাড়িতে একটা বাটনওয়ালা সেট।
ওই মহিলাকে নিয়ে উনি নাকি প্রায়ই ঘুরতে যায়, অথচ অামি তার স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও অামাদের বৈবাহিক সম্পর্কের ১০বছরেও কোথাও ঘুরতে যাইনি। তবুও অামার স্বামীর সন্দেহজনক কোনোকিছুই অামার দৃষ্টিগোচর হয়নি। দু'একবার ফোন অাসলেও অামি তা অন্য চোখে দেখিনি। কারণ অামার স্বামীর প্রতি অামার অগাধ বিশ্বাস অার ভালোবাসা নামক বিষয়টি ছিল। উনিও কখনো ভালোবাসার কোনো কমতি রাখেননি অামার সংসারে। তার এ ঘটনার পর অামি প্রায় বোবা হয়ে গিয়েছিলাম। অামার ছোটো ছোটো দুটো ছেলে-মেয়ে, তাকে নিয়ে অামি কার কাছে দাঁড়াব? শুনলাম গ্রামবাসী নাকি তাদের বিয়ে পড়িয়ে দেবে। অামি অামার স্বামীর ভাগ তো কাউকে দিতে চাইনি, তাহলে এমন কেন হলো? সতীনের ঘর করাটা কোনোদিনই অামি পারব না।
বিয়ে পড়িয়ে ওদের সম্পর্কটাকে জায়েজ করে দিয়েছেন গ্রামবাসী। বাড়িতে বউ নিয়ে এসেই মহিলা অামার পায়ে পড়ে গেল, কাঁদতে কাঁদতে বললো, 'বুবু অামাকে ক্ষমা করে দেন। অামি ভুল করেছি, অামি অন্যায় করেছি। অাপনার পায়ে অামাকে একটু ঠাঁই দিন।'
মহিলার কথা শুনে রীতিমতো অামি চমকে গেলাম। অামার স্বামীও মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে অাছে। দাওয়ার বাইরে অনেক লোকের সমাগম। অামি কেঁদে ফেললাম। সবার সামনে কোনো ঝামেলা না করে অামার সাজিয়ে রাখা ঘরটাতে ওদের জায়গা করে দিলাম। সন্তানদের নিয়ে অামি থাকতে শুরু করলাম অারেকটা ঘরে।
প্রায়ই অামি ওদের হাসি মশকরা এর অাওয়াজ শুনি। অাস্তে অাস্তে অামার প্রতি অামার স্বামীর ভালোবাসা কমতে লাগলো। একদিন নির্জনে তাকে ডেকে বললাম,
'অামি অাপনাদের সুখে ঘরে কাটা হয়ে থাকতে চাই না। অামি চলে যাব।'
অামার কথায় খানিকটা অবাক হয় রাসেল মানে অামার স্বামী, 'তোমার তো এখানে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না মায়া। তারপরেও কেন?'
অামি মাথা নিচু করে বললাম, 'অামাকে অাটকাবেন দয়া করে। অামি অামার ভালোবাসাটুকু নিয়েই চলে যাব।'
'তুমি কি অামার উপর রাগ করেছ মায়া? অামি কেমনে যেন ফেঁসে গেছি বুঝতেই পারিনি।'
'অাপনি অারও অনেককিছুই জানতে পারবেন না। অাপনি ভালো থাকবেন, এটাই অামি চাই।'
বিভিন্ন কথা দিয়ে অামাকে অাটকানোর চেষ্টা করলেও অামি অামার কথা প্রতি অনড় ছিলাম। সেদিন তাকে শেষ কথা বলেছিলাম যে,
'অামি অাপনাকে তালাক দিব না। শুধু অাপনার থেকে দূরে চলে যাব। অার দয়া করে অামার দুই পৃথিবীকে অামার কাছে চাইবেন না। কখনো মনে পড়লে অাসবেন, নিষেধ থাকল না।'
দুটো সন্তানের অন্তত একজনকে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অামার সন্তানকে তাদের সৎ মায়ের কাছে মানুষ করার মতো অবস্থায় রাখতে চাইনি। হয়তো তারা এখানে ভালো থাকবে কিন্তু মায়ের অাদর তো পাবে না। বাবা হয়তো দু'দিন ভালোভাবে কাছে টানলেও পরে মহব্বত কমে যাবে।
অামার সতীন অামার কাণ্ড দেখে মনে মনে খুশি হয়েছিল। রাজার সাথে রাজত্বও পেল বলে। কিন্তু মিথ্যা কান্না করার ভাণ করলো সে। অামার গলা ধরে বললো, 'বুবু অাপনি যাবেন না দয়া করে। অামার জন্য অাপনি এ সংসার ছেড়ে যাবেন না। দরকার হলে অামিই চলে যাব।'
কিন্তু তার কথার মধ্যে কোনো জোর ছিল না। ছিল না সত্যিকারের কাতরতা। অামি মেকি হেসে তাকে ভাঙা ভাঙা গলায় বললাম,
'তুমি ভালো থেক।'
অামার এক মামাতো ভাই ছাড়া দুনিয়াতে কেউ ছিল না। বাবা-মাকে ছোট বেলায় হারিয়েছি। মামা-মামীর সংসারে বড় হলেও জানতাম না অামার অারও কেউ অাছে কিনা। অামার দাদা-দাদী বা চাচা-চাচী।
স্নেহা অার সুমনকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হবার সময় চোখ দিয়ে পানি চলে অাসছিল। অামার সাজানো সংসার নিমিষেই শেষ হয়ে গেল। তিলতিল করে গড়ে তোলা প্রত্যেকটি কোণা যেন অামার দিকে অপলক নেত্রে তাকিয়ে কেঁদে কেঁদে বলছে,
'তুমি যেও না মায়া। অামাদের মায়ার ডোরে বেঁধে কোথায় যাচ্ছ?'
তাদের প্রতি হয়তো অামার নিশ্চুপ উত্তর,
'তোমরা অামারই স্পর্শ। তোদের প্রতি অামার ভালোবাসাটুকু কোনোদিনই কমবে না। ভালো থাকিস তোরা।'
কিছুদূর যাওয়ার পর পাঁচ বছরের সুমন বলে উঠলো, 'মা অামরা কোথায় যাচ্ছি?'
অামি মেকি হেসে বললাম, 'তুমি না তোমার মামার বাড়ি যেতে চেয়েছিলে?'
'হুম।'
'সেখানেই যাচ্ছি বাবা।'
'ছোট মা অার অাব্বা যাবে না?'
অামি শুকনো গলায় বললাম, 'না বাবা।'
সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে বের হয়েছিলাম। স্নেহার বাবা বিদায়বেলা চোখে পানি সমেত বলেছিলেন, 'কোথায় যাচ্ছ জানাবা কিন্তু। ছেলে-মেয়ে দুটোর খরচ অামি পাঠাব।'
অামি তাকে বলেছিলাম,
'তার অার দরকার হবে না।'
রাত এগারোটা নাগাদ ভাইয়ের বাড়িতে অাসলাম। মামাতো ভাই অামাকে দেখে অবাক হয়ে বললো,
'কী রে মায়া? হঠাৎ তুই?'
'হ্যাঁ রে।'
'তাও কোনো খোঁজ না দিয়ে!'
'তোর বাড়িতে কয়েকদিন থাকার জায়গা হবে? মাসখানেকের জন্য।'
'কী হয়েছে বলতো বোন?'
অামি সবকথা তাকে বললাম। দাওয়ার উপর পা ছড়িয়ে বসেছিলাম। চোখ দিয়ে অামার পানি অনবরত ছুটছে। ভাইয়ের বউ অামাকে অাপাতত এক গ্লাস পানি এনে দিলো। অামি ঢকঢক করে খেয়ে ভেতরে জমে থাকা গরমটাকে ছুটি দিয়ে দিলাম।
মামাতো ভাই জহির তো রেগে অাগুন। রাগী ভাব এনে বললো, 'তুই যাই বলিস অাপা। অামি কিন্তু মামলা করবো ওর নামে।'
জহিরের বউও তার সাথে সহমত পোষণ করলো। অামি শুকনো হেসে বললাম, 'রাগিস না ভাই। দোষ তো অামার। উনি তো অামাকে বাড়ি থেকে বের করে দেননি। অামি নিজের ইচ্ছায় এসেছি।'
কিছুক্ষণ পর জহিরের বউ ভাত এনে সামনে রাখলো। ভাত দেখে ভেতরের ক্ষুধা জেগে উঠলো। গত এক মাসে শান্তি করে খেতে পারিনি। গোস্ত, মাছ, পোলাও রান্না করলেও গলা দিয়ে নামেনি। অাজ ডাল ভাত দেখেই যেন পেটটা মোচড় দিয়ে উঠলো। গপগপ করে খেতে শুরু করলাম। স্নেহা অার সুমনকেও খাইয়ে দিলাম।
অামার এমন করে খাওয়া দেখে জহির অবাক হয়ে বললো, 'অাপা অাস্তে খাও। গলায় অাটকাবে তো।'
অামি তার কথায় কর্ণপাত না করে খাবারটুকু শেষ করে পানি ঢকঢক করে খেয়ে বললাম,
'জানিস ভাই, কতদিন পর শান্তি করে ভাত খেলাম? গোস্ত, মাছ অামার পেটে ঢোকে না রে। ওই বাড়ির সবকিছু বিষ লাগে। তোর বাড়িতে দিবি থাকতে? মাসখানেকের জন্যে।'
'অাপা, অামি গরিব হতে পারি, দিনে অানি দিনে খাই। তবুও তোকে পুষতে পারব না এমনটা হতে পারে? তুই তো ছোট থেকে অামাকে মানুষ করেছিস। অামরা যা খাই তুইও তাই খাবি।'
অামি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললাম, 'অালহামদুলিল্লাহ।'
(চলবে),,,,লেখক মনের মানুষ,,,
.
#গল্প: সতীত্ব
#পর্ব___১
#বি_দ্র:#যারা_দ্বিতীয়_পর্ব_পড়তে_চান_তারা_flow_ দিয়ে_সাথেই_থাকুন #ধন্যবাদ।
ওই মহিলাকে নিয়ে উনি নাকি প্রায়ই ঘুরতে যায়, অথচ অামি তার স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও অামাদের বৈবাহিক সম্পর্কের ১০বছরেও কোথাও ঘুরতে যাইনি। তবুও অামার স্বামীর সন্দেহজনক কোনোকিছুই অামার দৃষ্টিগোচর হয়নি। দু'একবার ফোন অাসলেও অামি তা অন্য চোখে দেখিনি। কারণ অামার স্বামীর প্রতি অামার অগাধ বিশ্বাস অার ভালোবাসা নামক বিষয়টি ছিল। উনিও কখনো ভালোবাসার কোনো কমতি রাখেননি অামার সংসারে। তার এ ঘটনার পর অামি প্রায় বোবা হয়ে গিয়েছিলাম। অামার ছোটো ছোটো দুটো ছেলে-মেয়ে, তাকে নিয়ে অামি কার কাছে দাঁড়াব? শুনলাম গ্রামবাসী নাকি তাদের বিয়ে পড়িয়ে দেবে। অামি অামার স্বামীর ভাগ তো কাউকে দিতে চাইনি, তাহলে এমন কেন হলো? সতীনের ঘর করাটা কোনোদিনই অামি পারব না।
বিয়ে পড়িয়ে ওদের সম্পর্কটাকে জায়েজ করে দিয়েছেন গ্রামবাসী। বাড়িতে বউ নিয়ে এসেই মহিলা অামার পায়ে পড়ে গেল, কাঁদতে কাঁদতে বললো, 'বুবু অামাকে ক্ষমা করে দেন। অামি ভুল করেছি, অামি অন্যায় করেছি। অাপনার পায়ে অামাকে একটু ঠাঁই দিন।'
মহিলার কথা শুনে রীতিমতো অামি চমকে গেলাম। অামার স্বামীও মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে অাছে। দাওয়ার বাইরে অনেক লোকের সমাগম। অামি কেঁদে ফেললাম। সবার সামনে কোনো ঝামেলা না করে অামার সাজিয়ে রাখা ঘরটাতে ওদের জায়গা করে দিলাম। সন্তানদের নিয়ে অামি থাকতে শুরু করলাম অারেকটা ঘরে।
প্রায়ই অামি ওদের হাসি মশকরা এর অাওয়াজ শুনি। অাস্তে অাস্তে অামার প্রতি অামার স্বামীর ভালোবাসা কমতে লাগলো। একদিন নির্জনে তাকে ডেকে বললাম,
'অামি অাপনাদের সুখে ঘরে কাটা হয়ে থাকতে চাই না। অামি চলে যাব।'
অামার কথায় খানিকটা অবাক হয় রাসেল মানে অামার স্বামী, 'তোমার তো এখানে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না মায়া। তারপরেও কেন?'
অামি মাথা নিচু করে বললাম, 'অামাকে অাটকাবেন দয়া করে। অামি অামার ভালোবাসাটুকু নিয়েই চলে যাব।'
'তুমি কি অামার উপর রাগ করেছ মায়া? অামি কেমনে যেন ফেঁসে গেছি বুঝতেই পারিনি।'
'অাপনি অারও অনেককিছুই জানতে পারবেন না। অাপনি ভালো থাকবেন, এটাই অামি চাই।'
বিভিন্ন কথা দিয়ে অামাকে অাটকানোর চেষ্টা করলেও অামি অামার কথা প্রতি অনড় ছিলাম। সেদিন তাকে শেষ কথা বলেছিলাম যে,
'অামি অাপনাকে তালাক দিব না। শুধু অাপনার থেকে দূরে চলে যাব। অার দয়া করে অামার দুই পৃথিবীকে অামার কাছে চাইবেন না। কখনো মনে পড়লে অাসবেন, নিষেধ থাকল না।'
দুটো সন্তানের অন্তত একজনকে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অামার সন্তানকে তাদের সৎ মায়ের কাছে মানুষ করার মতো অবস্থায় রাখতে চাইনি। হয়তো তারা এখানে ভালো থাকবে কিন্তু মায়ের অাদর তো পাবে না। বাবা হয়তো দু'দিন ভালোভাবে কাছে টানলেও পরে মহব্বত কমে যাবে।
অামার সতীন অামার কাণ্ড দেখে মনে মনে খুশি হয়েছিল। রাজার সাথে রাজত্বও পেল বলে। কিন্তু মিথ্যা কান্না করার ভাণ করলো সে। অামার গলা ধরে বললো, 'বুবু অাপনি যাবেন না দয়া করে। অামার জন্য অাপনি এ সংসার ছেড়ে যাবেন না। দরকার হলে অামিই চলে যাব।'
কিন্তু তার কথার মধ্যে কোনো জোর ছিল না। ছিল না সত্যিকারের কাতরতা। অামি মেকি হেসে তাকে ভাঙা ভাঙা গলায় বললাম,
'তুমি ভালো থেক।'
অামার এক মামাতো ভাই ছাড়া দুনিয়াতে কেউ ছিল না। বাবা-মাকে ছোট বেলায় হারিয়েছি। মামা-মামীর সংসারে বড় হলেও জানতাম না অামার অারও কেউ অাছে কিনা। অামার দাদা-দাদী বা চাচা-চাচী।
স্নেহা অার সুমনকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হবার সময় চোখ দিয়ে পানি চলে অাসছিল। অামার সাজানো সংসার নিমিষেই শেষ হয়ে গেল। তিলতিল করে গড়ে তোলা প্রত্যেকটি কোণা যেন অামার দিকে অপলক নেত্রে তাকিয়ে কেঁদে কেঁদে বলছে,
'তুমি যেও না মায়া। অামাদের মায়ার ডোরে বেঁধে কোথায় যাচ্ছ?'
তাদের প্রতি হয়তো অামার নিশ্চুপ উত্তর,
'তোমরা অামারই স্পর্শ। তোদের প্রতি অামার ভালোবাসাটুকু কোনোদিনই কমবে না। ভালো থাকিস তোরা।'
কিছুদূর যাওয়ার পর পাঁচ বছরের সুমন বলে উঠলো, 'মা অামরা কোথায় যাচ্ছি?'
অামি মেকি হেসে বললাম, 'তুমি না তোমার মামার বাড়ি যেতে চেয়েছিলে?'
'হুম।'
'সেখানেই যাচ্ছি বাবা।'
'ছোট মা অার অাব্বা যাবে না?'
অামি শুকনো গলায় বললাম, 'না বাবা।'
সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে বের হয়েছিলাম। স্নেহার বাবা বিদায়বেলা চোখে পানি সমেত বলেছিলেন, 'কোথায় যাচ্ছ জানাবা কিন্তু। ছেলে-মেয়ে দুটোর খরচ অামি পাঠাব।'
অামি তাকে বলেছিলাম,
'তার অার দরকার হবে না।'
রাত এগারোটা নাগাদ ভাইয়ের বাড়িতে অাসলাম। মামাতো ভাই অামাকে দেখে অবাক হয়ে বললো,
'কী রে মায়া? হঠাৎ তুই?'
'হ্যাঁ রে।'
'তাও কোনো খোঁজ না দিয়ে!'
'তোর বাড়িতে কয়েকদিন থাকার জায়গা হবে? মাসখানেকের জন্য।'
'কী হয়েছে বলতো বোন?'
অামি সবকথা তাকে বললাম। দাওয়ার উপর পা ছড়িয়ে বসেছিলাম। চোখ দিয়ে অামার পানি অনবরত ছুটছে। ভাইয়ের বউ অামাকে অাপাতত এক গ্লাস পানি এনে দিলো। অামি ঢকঢক করে খেয়ে ভেতরে জমে থাকা গরমটাকে ছুটি দিয়ে দিলাম।
মামাতো ভাই জহির তো রেগে অাগুন। রাগী ভাব এনে বললো, 'তুই যাই বলিস অাপা। অামি কিন্তু মামলা করবো ওর নামে।'
জহিরের বউও তার সাথে সহমত পোষণ করলো। অামি শুকনো হেসে বললাম, 'রাগিস না ভাই। দোষ তো অামার। উনি তো অামাকে বাড়ি থেকে বের করে দেননি। অামি নিজের ইচ্ছায় এসেছি।'
কিছুক্ষণ পর জহিরের বউ ভাত এনে সামনে রাখলো। ভাত দেখে ভেতরের ক্ষুধা জেগে উঠলো। গত এক মাসে শান্তি করে খেতে পারিনি। গোস্ত, মাছ, পোলাও রান্না করলেও গলা দিয়ে নামেনি। অাজ ডাল ভাত দেখেই যেন পেটটা মোচড় দিয়ে উঠলো। গপগপ করে খেতে শুরু করলাম। স্নেহা অার সুমনকেও খাইয়ে দিলাম।
অামার এমন করে খাওয়া দেখে জহির অবাক হয়ে বললো, 'অাপা অাস্তে খাও। গলায় অাটকাবে তো।'
অামি তার কথায় কর্ণপাত না করে খাবারটুকু শেষ করে পানি ঢকঢক করে খেয়ে বললাম,
'জানিস ভাই, কতদিন পর শান্তি করে ভাত খেলাম? গোস্ত, মাছ অামার পেটে ঢোকে না রে। ওই বাড়ির সবকিছু বিষ লাগে। তোর বাড়িতে দিবি থাকতে? মাসখানেকের জন্যে।'
'অাপা, অামি গরিব হতে পারি, দিনে অানি দিনে খাই। তবুও তোকে পুষতে পারব না এমনটা হতে পারে? তুই তো ছোট থেকে অামাকে মানুষ করেছিস। অামরা যা খাই তুইও তাই খাবি।'
অামি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললাম, 'অালহামদুলিল্লাহ।'
(চলবে),,,,লেখক মনের মানুষ,,,
.
#গল্প: সতীত্ব
#পর্ব___১
#বি_দ্র:#যারা_দ্বিতীয়_পর্ব_পড়তে_চান_তারা_flow_ দিয়ে_সাথেই_থাকুন #ধন্যবাদ।
0 Comments