নব-দম্পতি

অফিসে যাওয়ার জন্য রওনা দিয়েছি তখনি আব্বা বলে,, সৌরভ তোর সাথে গতকাল বাইকের পেছনে যেই মেয়েটা দেখছি সেই মেয়েটা কে? (আব্বাকে বলা যাবেনা আমার গ্রালফ্রেন্ড রিপা! বলে দেয় আমার অফিস কলিক গাড়ি পায়নি তাই বাড়িতে পৌঁছায় দিয়েছি। যেই কথা সেই কাজ আব্বাকে বলেছি)

আমি:- আব্বা ওনার নাম রিপা ওনি আমার অফিস কলিক বাস পায়নি তাই বাইকে করে বাসায় দিয়ে এসেছি।

আব্বা:- ও তাই বল আমি ভাবছি তোর গ্রালফ্রেন্ড। আচ্ছা তাহলে তোর কোনো গ্রালফ্রেন্ড নেই?

আমি:- মাথাটা নাড়িয়ে বলেছি নাহ আমার গ্রালফ্রেন্ড নেই।

আব্বা:- যাক তাহলে আমাকে আর কোনো জামেলা পড়তে হলোনা।

আমি:- কিসের জামেলা?

আব্বা:- আমার বস্ জাবেদ সাহেবের মেয়ের সাথে তোর বিয়ে কথা ফাইনাল করেছি গতকাল। আর গতকাল দেখছি তোর বাইকের পেছনে একটা মেয়ে আমি তো রাতে অনেক চিন্তা করেছি এখন চিন্তা মুক্ত হলাম।

আমি:- আব্বা আপনি আমাকে না জানিয়ে বিয়ের পাকা কথা দিয়েছেন কেনো?

আব্বা:- কেনো সমস্যা কি তুই বড় হয়েছিস তকে বিয়ে করানো আমার কর্তব্য। আমি এই বছর হজ্জ করতে যাবো তাই তোর বিয়েটা দিয়ে দিতে চাই।

আমি:- আব্বা আপনাকে আমি মিথ্যা বলছি রিপা আমার গ্রালফ্রেন্ড ওকে আমি অনেক ভালোবাসি।

আব্বা:- চাপা মারার যায়গা পাওনা আমি তোমার বাপ আমার সাথে চিটিং গিরি চলবে না। তোমার বড় ভাই রাজু আমার সাথে এমন করছে কিন্তু চান্স পায়নি। আমার বস্ এর মেয়েকে তোমার বিয়ে করতে হবে যদি না করো তাহলে বাড়ি থেকে বের করবো সাথে চাকরি চুতু করে ফেলবো।

আমি:- আব্বা আপনি এমন কথা বলতে পারলেন?

আব্বা:- হ্যা পারছি এবার বল কি করবি?

আমি:- বাড়ি গাড়ি চাকরি সব হারাতে রাজি আছি কিন্তু রিপাকে হারাতে পারবোনা। দরকার হলে আমি বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো তাও এই বিয়ে করতে পারবোনা।

আব্বা:- ঠিক আছে! তাহলে বাবা তুমি চলে যাও আর দয়া করে অফিসে যেয়োনা কারন তোমার চাকরিটার আমি বারোটা বাজিয়ে দিতেছি।

আম্মা:- আপনি এসব কি বলছেন নিজের ছেলের চাকরির বারোটা বাজিয়ে দিবেন মানে?

আব্বা:- তুমি চুপ থাকো! তুমি যখন ছেলের বউকে কিছু বলো তখন আমি কিছু বলি? এখন আমি আমার ছেলেকে বলছি তুমি চুপ থাকো। সৌরভ তুই সিদ্যান্ত নিবি এখন কি করবি?

আমি:- আমি বাড়ি থেকে চলে যাবো চাকরি ছেরে দিবো তাও আমি আমার ভালোবাসার মানুষকে ছাড়তে পারবোনা।

আব্বা:- তাহলে তুমি বাবা যাও আর আমার বাইকের চাবিটা দাও। আব্বা নিজে এসে আমার হাত থেকে বাইকের চাবিটা নিয়ে গেছে।

আমি:- ঠিক আছে গেলাম! বাসা থেকে একটু বাহিরে বের হয়ে এসে রিপাকে ফোন করেছি। রিং হয়ে যাচ্ছে রিসিব করার কোনো নাম নেই তিনবার ফোন করার পর রিসিব হয়েছে।

রিপা:- এত ফোন করছো কেনো?

আমি:- দরকার আছে তোমার সাথে জুরুরী কথা আছে। তুমি আমাকে বিয়ে করবে?

রিপা:- হ্যা করবো! কিন্তু এখন হঠাত বিয়ের কথা কেনো বলছো?

আমি:- আমরা আজকে বিয়ে করবো তোমাকে কাজি অফিসের ঠিকানা মেসেজ করে দিতেছি তুমি ঐ খানে চলে এসো!

রিপা:- কি আজকে বিয়ে করতে পারবোনা আমি! তোমার মাথা ঠিক আছে তো নাকী? তিন মাস পরে আমার ফাইনাল পরীক্ষা এখন এসেছো বিয়ে করতে। সামনে পরীক্ষা এখন এত প্যারা দিওনা জানু প্লিজ।

আমি:- কি বলছো তুমি?

রিপা:- ঠিকই বলছি! ফোন রাখো আব্বা বাসায় আছে যদি জানতে পারে আমি প্রেম করি তাহলে কালকে আমার বিয়ে দিয়ে দিবে। আর তোমাকে না বলছি আমি বাসায় থাকলে ফোন করবেনা তাও কেনো ফোন করছো? (রিপা কথা গুলি বলে ফোনটা কেটে দিয়েছে)

আমি:- এখন কি করবো দূরর মাথায় কোনো কাজ করছেনা যাই গিয়ে জুয়েলের সাথে কথা বলে দেখি কি করা যায়। জুয়েলের কাছে যেতেছি তখনি ভাবি ফোন করেছে। ভাবি কখনো আমাকে ভালো কোনো বুদ্ধি দেয়নি বরং খারাপ বুদ্ধি দেওয়ার জন্য উৎপেতে থাকে। আবার ফোন করেছে রিসিব করতেই বলে,,,

ভাবি:- সৌরভ তুমি কোথায় আছো?

আমি:- কেনো কি দরকার?

ভাবি:- তোমাকে কিছু কথা বলার ছিলো!

আমি:- যা বলার ফোনে বলো!

ভাবি:- সৌরভ তুমি তোমার বাবার পছন্দ করা মেয়েকে বিয়ে করে নাও। বিয়ের পর ওর সাথে ঠিক করে কথা বলবেনা! ভালো কথায় ঝগড়া করবে উঠতে বসতে কাজে অকাজে দমক দিয়ে কথা বলবে। রাতে ফ্লোরে ঘুমাতে দিবে আর সব সময় খারাপ ব্যবহার করবে তাহলে সেই মেয়ে নিজে থেকে তোমাকে ডির্ভোস দিয়ে চলে যাবে। তখন তোমার বাবা তোমাকে কিছু বলবেনা।

আমি:- বিয়ে করবো মানে রিপার কি হবে?

ভাবি:- রিপাকে কিছুই বলার দরকার নেই। তুমি রিপার সাথে আগের মত প্রেম করে যাবে আর এদিকে তোমার বউকে দিন রাত টর্চার করতে থাকবে। দেখবে দুই মাসে তোমার আমার আর শ্বাশুড়ি মায়ের টর্চার সহ্য করতে না পেরে তোমাকে ডির্ভোসের কাগজ হাতে ধরিয়ে চলে যাবে।

আমি:- আইডিয়াটা মন্দ না! কিন্তু মেয়েটা যদি আব্বাকে বলে দেয় তাহলে তো আব্বা আমাকে বারোটা বাজাবে।

ভাবি:- তুমি তোমার আব্বার সামনে অনেক সুন্দর ব্যবহার করবে। আমি তোমার সাথে মিলে কাজ করবো যাতে করে বিয়ের দুই মাসের মাথায় পালিয়ে যাই কেমন।

আমি:- উম্মা ভাবি তুমি জিবনের এই প্রথম আমাকে একটা ভালো বুদ্ধি দিয়েছো! ঠিক আছে আমি বাসায় আসতেছি আব্বাকে বলে দিবো বিয়ে করতে রাজি আছি। মনের সূখে বাড়িতে ঢুকেছি আমাকে দেখে আব্বা বলে।

আব্বা:- আবার এসেছিস কেনো?

আমি:- আব্বা আমাকে ক্ষমা করে দিন আমি আপনার পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি আছি।

আব্বা:- সত্যি বিয়ে করবি আয় আমার বুকে আয়।
আব্বা আমাকে জড়িয়ে ধরেছে! সৌরভ মেয়েটা অনেক সুন্দর আর ভদ্র খুব ভালো মেয়ে! তোর কপালটা অনেক ভালো তাই এমন মেয়ের সাথে তোর বিয়ে হচ্ছে। সবাই আজকে আমার সাথে যাবে ওরা আজকে রাতে বিয়েটা পড়িয়ে দিতে চাই।

ভাবি:- ঠিক আছে! তাহলে তো কিছু কেনা কাটা করতে হবে।

আম্মা:- আমার ছেলের বিয়ে অথচ কোনো অনুষ্টান করবে না এইটা কি হবে?

আব্বা:- অনুষ্টান পরে করা হবে এখন তাড়াতাড়ি বিয়েটা পড়িয়ে দিতে চাই। (আব্বা অনেক খুশি হয়েছে আব্বা তার বসকে ফোন করেছে বলছে আজ বিয়ে করিয়ে দিতে চাই।)

আম্মা:- সৌরভ শুন।

আমি:- হ্যা আম্মা বলেন?

আম্মা:- তুই বিয়েটা করিস না! মেয়েটা সুবিধার নয় আমি দেখছি মেয়েটা অনেকটা রাগি টাইপের।

আমি:- কিন্তু বিয়ে যদি না করি তাহলে আব্বা তো বাড়ি থেকে বের করে দিবে? ( এই তুমি সৌরভকে কি বলতেছো)

আম্মা:- কিছুনা বলতেছি তুই বিয়েটা কর মেয়েটা অনেক ভালো তুই অনেক সূখে থাকবি। এসব কিছুই বলতেছি।

আব্বা:- বড় বউ সব কিছু রেডি করেছো?

ভাবি:- হ্যা সব রেডি! সৌরভ যাও গিয়ে রেডি হয়ে নাও।

আমি:- হ্যা যাচ্ছি! রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে গেলাম। নিচে এসেছি আব্বা ভাবি ভাইয়া সহ এক গাড়িতে করে গেলাম কনের বাড়িতে।

আব্বা:- সৌরভ সবার সাথে সুন্দর করে ব্যবহার করবি। আর ওনি হচ্ছে তোর শ্বশুড় মসায় সালাম কর।

আমি:- আস্সালামু আলাইকুম।

শ্বশুড়:- উলাইকুম আস্সালাম। এসো বাবা ভিতরে এসো। (বাড়ির ভিতরে ঢুকছি বাড়িটা অনেক সুন্দর আর অনেক বড়। আমি সুফায় বসেছি কিছুক্ষনের মধ্যে আমাদের খাওয়া দাওয়ার কাজ শেষ করেছি)

আব্বা:- স্যার এবার বিয়েটা শুরু করা যাক।

শ্বশুড়:- স্যার নয় বলো বেয়াই সাহেব। কাজি আর মৌলভী সাহেব আসেন বিয়েটা আরম্ভ করেন।(কাজি তার কাজ আরম্ভ করেছে আর ঐদিকে হুজুর তার কাজ আরম্ভ করেছে! কিছুক্ষনের মধ্যে ইসলামিক সকল নিয়ম মেনে আমাদের বিয়েটা হয়ে গেলো। কিছু আনুষ্টিক নিয়ম শেষে বউকে আনার জন্য শ্বশুড় মসায় বলছে! কিছু মেয়ে একটা মেয়েকে ধরে নিয়ে আসতেছে ঘোমটা লম্বা আছে কিন্তু কান্নার কোনো শব্দ পাচ্ছিনা)

আমি:- ভাবি তুমি তো বিয়ের দিন অনেক কান্না করেছো কিন্তু এই মেয়ে তো কোনো কান্না করছেনা। বোবা নাকী মেয়ে?

ভাবি:- হতেও পারে তাই তো তোমার আব্বা এত তাড়াতাড়ি বিয়েটা পড়িয়ে দিয়েছে। যদি বোবা হয় তাহলে তো তোমার জন্য আরো ভালো হবে। খুব সহজে বাড়ি থেকে বিদায় করতে পারবে।

শ্বশুড়:- বাবা সৌরভ আমার মেয়ে তসিবা ইসলামকে আজকে তোমার হাতে তুলে দিলাম(তাহলে মেয়েটার নাম তসিবা ইসলাম তখনি তসিবার হাতটা আমার হাতের উপর রাখছে) আজ থেকে তুমি ওর সব কিছু খেয়াল রাখবে। তসিবা যদি কোনো ভুল করে তাহলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখো কেমন।

আমি:- আপনি চিন্তা মুক্ত থাকেন তসিবা অনেক সূখে থাকবে।

আব্বা:- বেয়াই সাহেব আমরা আছি তো তসিবাকে দেখে শুনে রাখবো। আপনি কোনো চিন্তা করবেন না। এখন মেয়েকে বিদায় দেন! (তসিবার বাবা মা আমাকে অনেক বুঝিয়ে দিয়েছে! সবাই কান্না করছে কিন্তু তসিবা একটু আঁ করেনি। আমার তো ঐ দিকে বারোটা বাজতেছে যদিও তসিবাকে এখনো ভালো করে দেখিনি। এক এক করে সবাই গাড়িতে উঠেছি! তসিবা আমার পাশে বসেছে বাবা সামনে ভাইয়া গাড়ি চালাচ্ছে ভাবি একটু পেছনে বসেছে। ঘন্টা খানেকের মধ্যে আমরা বাড়িতে চলে এসেছি সাধারন ভাবে বরণ করে নিয়েছি আম্মা আমাদের।

ভাবি:- তসিবা তুমি আমার সাথে আসো আমি সৌরভের রুমে তোমাকে নিয়ে যাই। (তসিবা হা না কিছুই বলেনি ভাবির সাথে হেটে রুমে গেছে)

ভাইয়া:- সৌরভ তোর বউ তো কোনো কথায় বলেনা এমন কি কান্না করেনি বোবা নাকি?

আমি:- ভাই বোবা হলেও কি আর বোবা না হলেও কি এই বাড়িতে মেয়াদ মাত্র দুই মাস।

ভাইয়া:- মানে কি বলছিস?

আমি:- হ্যা ঠিকই বলছি! আচ্ছা আমি একটু ছাদের উপরে যাই তখনি ভাবি এসে বলে।

ভাবি:- এমনিতেই রাত ১টা বেজে গেছে এখন রুমে যাবে চলো। ভাবি আমাকে রুমে নিয়ে এসেছে। যাও ভিতরে ঢুকে দেখো তোমার বউ বোবা নাকী কথা বলতে পারে।

আমি:- যাই হোক মেয়াদ তো মাত্র দুই মাস বলে ভিতরে ঢুকেছি! আমি কিছু বলতে যাবো তখনি আমার হাতে একটা চিঠির মত কাগজ ধরিয়ে দিয়েছে! কাগজটা খুলে তো আমার মাথায় হাত দেওয়ার অবস্থা----

To be continue-------

সবাই এড করে নিন। আমার টাইমলাইনে আর ও গল্প দেওয়া আছে। লাইক কমেন্ট শেয়ার করে সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।



# নব-দম্পতি
#পর্ব_০২
#ক্ষুদে_লেখক
!!
বাসর ঘরে ঢুকে বউকে সালাম দিয়েছি আস্সালামু আলাইকুম! বউ আমার উত্তর না নিয়ে আমার দিকে এক টুকরা কাগজ এগিয়ে দিয়েছে। আমি বউয়ের দিকে তাকিয়ে আছি তখন ইশারা করে আমাকে বলছে কাগজটা হাতে নিতে। আমি হাত বাড়িয়ে কাগজটা নিয়েছি দেখি কাগজে লিখা আছে উলাইকুম আস্সালাম। আমি কাগজটা পড়ে ওকে জিজ্ঞেস করেছি এই তুমি কি বোবা নাকী? বউ আমার আবার একটা কাগজে লিখে আমার দিকে এগিয়ে দিয়েছে। কাগজটা হাতে নিয়ে পড়তেছি।

বউ:- আমি বোবা না আমি কথা বলতে পারিনা কিন্তু কানে সব শুনি। আমার ঘুম পাচ্ছে ঘুমাবো আরো কিছু জিজ্ঞেস করার থাকলে তাড়াতাড়ি করেন। আমার পছন্ড ঘুম পাচ্ছে। কাগজটা পড়ে আমি একটা জুড়ে নিশ্বাস নিয়েছি এমন একটা বোবা মেয়ের সাথে আমার আব্বা আমাকে বিয়ে দিয়েছি।

আমি:- এই শুনো ঢং না করে মুখে বলো আমি জানি তুমি কথা বলতে পারো। (তখন আবার একটা কাগজে লিখে আমার দিকে এগিয়ে দিয়েছে) হাতে নিয়ে দেখি আরো কিছু লিখা!

তসিবা:- ঢং করতে যাবো কেনো? আমি তো কথায় বলতে পারিনা এখানে ঢং করার কি দেখলেন? তবে মাথায় হাত দিয়ে কি চিন্তা করছেন আমি জানি যদি অনুমতি দেন তাহলে লিখে দিতে পারি।

আমি:- তোমার কিছুই লিখতে হবেনা এখন তুমি ঘুমাও তানা হলে আমার মেজাজ খারাপ হয়ে যাবে। যাও তুমি নিচে গিয়ে ঘুমাও আমি একা খাটের উপর ঘুমাবো।( তখন আবার একটা কাগজ লিখে এগিয়ে দিয়েছে)

তসিবা:- একা ঘুমালে আমার ঘুম আসেনা! আর আমার নিচে ঘুমানোর অব্বাশ নেই! আমি খাটের উপর ঘুমাবো যদি আপনার ইচ্ছে হয় তাহলে নিচে ঘুমান।

আমি:- কি আমি নিচে ঘুমাবো বলে ওর হাত ধরে টান মেরে দাঁড় করিয়ে নিয়েছি। খাটের উপর থেকে টেনে নামিয়ে নিয়েছি। তুমি বের হও আমার রুম থেকে বাহিরে থাকবে। (তসিবা কিছু বলছেনা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। বালিশ আর চাদর সব কিছু এলো মেলো করে দিয়েছি।) তখনি ওর হাতের মোবাইলটা এগিয়ে দিয়েছে আমার দিকে আমি হাতে নিয়ে দেখি কিছু লেখা।

তসিবা:- আমি বাহিরে যাবো মানে আমি রুমে থাকবো দরকার পড়লে আপনি বাহিরে গিয়ে ঘুমান।

আমি:- কি আমি যাবো যাওচ্ছি বলে ওর হাত ধরে টেনে দরজার সামনে নিয়ে এসেছি। যাও তুমি বাহিরে যাবে আর আব্বাকে কিছু বললে তোমার খবর আছে। তখনি তসিবা মগটা হাতে নিয়ে গিয়ে খাটের উপর পানি ঢেলে দিয়েছে। তোমার সাহোস তো কম না তুমি খাটের উপর পানি ঢালছো কেনো? তসিবা চুপ চাপ গিয়ে সুফায় শুয়ে পড়ছে! আমি গিয়ে ওর দিকে এগিয়ে যেতে ছিলাম তখনি মোবাইলের রিংটন বেজে উঠেছে হাতে নিয়ে দেখি রিপা ফোন করেছে! বোবা মাইয়া আজকে বেচে গেলি কারন তোর কপাল ভালো আমার জানু ফোন করছে বলে মোবাইল হাতে নিয়ে বেড়িয়ে এসেছি। ছাদে এসে রিপাকে ফোন ব্যাক করেছি রিং হতেই রিসিব করেছে।

রিপা:- আমার ফোন রিসিব করোনি কেনো?

আমি:- কি করে করবো আমি তো ঘুমিয়ে ছিলাম।

রিপা:- আমার ঘুম আসছেনা তুমি আমার সাথে কথা বলবে?

আমি:- হ্যা বলবো।

রিপা:- উম্মা আমাকে ফোনে কিস করছে। আমি রিপার সাথে ব্যাঞ্চের উপর শুয়ে শুয়ে কথা বলছি। রিপার সাথে কথা বলতে বলতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি ঠিক বলতেও পারবোনা। একদম ফজরের আজান শুনে ঘুম ভাঙছে চোখ মেলে দেখি মাথায় বালিশ গায়ের উপর চাদর আর মোবাইলটা নিচে রাখা। মনে মনে ভাবতেছি এই কাজ গুলি কার হবে? নিশ্চয় ভাবি এসেছে কারন ভাবি জানে আমি আজকে রাতে তসিবার সাথে ঝগড়া করে বাসর ঘরে বাহিরে থাকবো।

যাই গিয়ে নামায পড়ে আশি। তাড়াতাড়ি করে নামায পড়তে চলে গেছি সত্যি বলতে দিনটা যদি নামায দিয়ে শুরু হয় তাহলে আমার খুব ভালো কাটে। নামায পড়ে রাস্তায় সকালে কিছুটা হাটা হাটি করে বাড়ীতে এসে সোজা রুমে চলে এসেছি। দেখি তসিবা ঘুমিয়ে আছে আমি কিছু বলিনি জানালার পর্দাটা সরিয়ে দিয়েছি সোনালী রৌদে রুমটা একদম সোনালী হয়ে গেছে। প্রতিদিনের মত আজকেও খুব ভালো লাগছে যেই তসিবার দিকে চোখটা গেলে তখন একটা যায়গা চোখটা আটকে গেলো। কিছুতেই চোখটা সরাতে পেরছিনা এত সুন্দর মানুষ হয় নাকী তসিবার দিকে তো তখন ঠিক করে তাকায়নি কিন্তু এখন দেখে তো ফিদা হয়ে যাবার অবস্থা। তখনি তসিবা নরে চরে শুয়েছে এবার শাড়ীটা পেট থেকে সরে গেছে ওর পেটে একটা তিল যা ওর পেটটাকে আরো সুন্দর করছে নাহা এভাবে তাকানোটা ঠিক নয় কারন আমি তো রিপাকে ভালোবাসি। যাই গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেই কিছুক্ষনের মধ্যে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। উয়াশ রুম থেকে বের হয়ে দেখি রুমটা একদম সুন্দর করে গুচানো আর তসিবা রুমে নেই আমি এদিক সেদিক তাকিয়ে বের হতে যাবো তখনি তসিবা সামনে এসে একটা কাগজের টুকরা ধরিয়ে দিয়েছে।

তসিবা:- আমাকে খুঁজতেছেন?

আমি:- তোমাকে খুঁজবো কেনো? সরো সামনে থেকে আর বেশি চালাকি করার চেষ্টা করবেনা বলে দিলাম। তসিবাকে ধাক্বা দিয়ে সরিয়ে আমি নিচে চলে এসেছি। দেখি আম্মা আব্বা সহ সবাই বসে আছে নাস্তা করার জন্য। আমি কাছে গিয়ে আব্বাকে জিজ্ঞেস করেছি! আব্বা আপনি যেনে শুনে কেনো বোবা একটা মেয়ের সাথে আমার বিয়ে দিয়েছেন?

আব্বা:- তসিবা বোবা না ও কানে সব শুনে কিন্তু কথা বলতে পারেনা। তবে সব কিছু লিখে বলে দেয়। আর তোমার জন্য কি আমি রাজকন্যা খুঁজে আনবো নাকী?

আমি:- এই বোবা বউ নিয়ে আমি সংসার করতে পারবোনা!

আব্বা:- এখন বিয়ে হয়ে গেছে সংসার তোমার করা লাগবে।

আমি:- বললে হলো?

আব্বা:- হ্যা বলছি তাই হবে! সৌরভ তোর নাটক অনেক সহ্য করেছি এখন যদি মেয়েটার সাথে কোনো খারাপ আচরন করিস তাহলে কিন্তু ঐ চাকরি বাইকের চাবি এটি এম কার্ড সহ সব কিছু রেখে বাড়ী থেকে বের করে দিবো। বোবা বউ তো ভালো তোমার বড় ভাবির মত হলে তো সারাদিন ঝগড়া করবে।

ভাবি:- আমি কি করেছি সব সময় আপনারা শুধু আমাকে দোষেন। আপনার ছেলে তো আমার কোনো কথায় শুনেনা।

আম্মা:- শুরু করে দিয়েছো এই জন্য তোমার সাথে এমন ব্যবহার করি। সৌরভ যা হবার পরে হবে সবে তো শুরু কিছুদিন যাক এরপর যদি ভালো না লাগে তাহলে তাড়িয়ে দিবি বাড়ি থেকে এরপর আবার তকে আমার পছন্দ মত বিয়ে করাবো।

আব্বা:- সবাই মিলে নতুন বউয়ের সাথে এমন। ব্যবহার করলে তো নতুন বউ এক সাপ্তাহে পালাবে।

আম্মা:- এইটা তো আমিও চাই! তুমি ছেলেদের যা খুশি বলো আমি তোমাকে কিছু বলবোনা কিন্তু বউদের সাথে যা করার আমি করবো। তুমি শুধু দেখে যাবে আর যদি বেশি বেশি করো তাহলে বাপের বাড়ীতে চলে যাবো আর এগ্রিমেন্ট দেখিয়ে তোমার নামে মামলা করবো

আমি:- কিসের এগ্রিমেন্ট আম্মা?

আম্মা:- তোর আব্বার সাথে চুক্তি হয়ছে বিয়ে করাবে তোদের তোর বাপের পছন্দ আর বউদের সাথে আমি যা খুশি তাই করবো এতে তোর বাবা কিছুই বলতে পারবোনা। চুক্তির কাগজ এখনো যত্ন করে রাখছি।

আব্বা:- ঠিক আছে আমি তো মেনে নিয়েছি নাকী।
সৌরভ তুই বউ ছাড়ার কথা যদি আরেকদিন বলিস তাহলে তোর খবর করিয়ে দিবো। তোর বড় ভাইয়াকে দেখে কিছু শিখ।

ভাইয়া:- হ্যা সৌরভ।

আমি:- ভাই তুই চুপ থাক তোর মত বউ পাগল আমি হতে চাইনা। আম্মা তুমি এই মেয়েকে দিয়ে যা পারো তা করাও দরকার হলে কাজের মেয়েকে তাড়িয়ে দাও। ওকে দিয়ে বাড়ীর সব কাজ করাবে ফ্লোর মুছা হতে শুরু করে রান্না সহ সব কাজ করাবে।

আম্মা:- তুই একদম মনের কথা বলছিস আমিও ভাবছি বাড়ীতে দুইটা বউ থাকতে কাজের মেয়ে রেখে এত টাকা বেতন দিয়ে রাখবো কেনো? জরিনা কাল থেকে তকে দুই মাসের ছুটি তুই বাড়ী থেকে কিছু দিন ঘুরে আয়।

জরিনা:- সত্যি কয়তাছেন খালাম্মা?

আমি:- হ্যা একদম সত্যি আর এই নে পাঁচশত টাকা রাখ তোর মায়ের জন্য কিছু কিনে নিস। জরিনা অনেক খুশি হয়েছে। আম্মা আমি একটু বের হবো অফিসে যেতে হবে।

আব্বা:- তোর অফিসে যেতে হবেনা তুই আজকে তসিবাকে নিয়ে ওদের বাড়ীতে যাবি।

আমি:- সব মেনে নিয়েছি এখন ওদের বাড়ীতে যেতে পারবোনা। এমন বোবা মেয়ে নিয়ে রাস্তায় কোথাও গেলে নিজের মান সম্মান বলতে কিছুই থাকবেনা। তখনি দেখি তসিবা নিচে নামতেছে। সাদা চুড়িদার সাথে মেচিং করা চুড়ি আর চুল গুলি ছাড়া বাহা অনেক সুন্দর লাগছে। তসিবা নিচে এসেছে তখনি আম্মা বলে।

আম্মা:- কাল থেকে প্রতিদিন সকালে নামায পড়বে আর এসব চুড়িদার পড়া চলবেনা শাড়ী পড়বে কথাটা মনে থাকে যেনো? তখনি তসিবা আম্মার হাতে ওর মোবাইলটা এগিয়ে দিয়েছে। আম্মা তা দেখে আরো রেগে গেছে তোমার সাহোস কি করে হয় আমার সাথে মোবাইল দেওয়ার।

আমি:- আম্মা মোবাইলে কিছু লিখা আছে ঐ গুলি পড়ে দেখেন ও কি বলছে লিখা আছে। আম্মা মোবাইলের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ পর মোবাইলটা আঁছার মেরে ভেঙে ফেলছে আর বলছে।

আম্মা:- এসব নাটক ফাটক আমার সাথে চলবেনা তুমি যা বলার হাতের ভঙ্গিমাতে বুঝাবে। আর শুনো আমি যা যা বলবো তুমি তা তা করবে আর আমার অনুমতি ছাড়া এক পা এদিক সেদিক করবেনা। তসিবা মাথাটা নাড়িয়ে উপরের দিকে চলে গেছে। সৌরভ দেখছিস এমন ভাবে কিছুদিন খুব টাইট ভাবে রাখবো তাহলে তাড়াতাড়ি বাড়ী ছেরে পালাবে।

আমি:- হ্যা মা একদম ঠিক বলছো ঠিক তখনি তসিবা হাত তালি দিতে দিতে নিছে নামতেছে-----

To be continue---------
(আগের পর্ব আমার টাইমলাইনে দেওয়া আছে। লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করে সাথেই থাকুন 💝)


# নব-দম্পতি
#পর্ব_০৩
#ক্ষুদে_লেখক
!!
তসিবা হাত তালি দিতে দিতে নিছে নেমে এসেছে আম্মা আব্বা ভাবি সহ আমি দাঁড়িয়ে আছি। তসিবা এসেই আমার হাতে একটা কাগজের টুকরা দিয়েছে। কাগজে লিখা আছে এত সহজে আমি আপনাকে মুক্ত করছি না আমাকে চিনতে আপনারা ভুল করেছেন! এখন কথা না বাড়িয়ে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নেন আমি আর আপনি দুজনে আমাদের বাড়িতে যাবো।

আমি:- বলছি তো আমি যাবোনা তুমি একা যাও! বেশি বেশি করলে কিন্তু একে বারে বাপের বাড়ীতে পাঠিয়ে দিবো।

আব্বা:- সৌরভ আবার বউমাকে বকা দিতেছিস। দে আমার সব কিছু এখুনি তকে বাড়ী থেকে বের করে দিবো।

আমি:- আরে আপনি তো দেখছি সিরিয়াছ নিয়েছেন আমি তো তসিবার সাথে মজা করছিলাম। তসিবা তুমি গিয়ে তৈরি হয়ে নাও আমি আসতেছি। (তসিবা একটু মুচকি হেসে চলে গেছে বাহা তসিবার মুচকি হাসিটা অনেক সুন্দর। সবাই সবার মত করে চলে গেছে এমনি ভাবি বলে)

ভাবি:- সৌরভ তুমি কি ভুলে গেছো তসিবার সাথে কি কি করবে? তুমি তো দেখছি তসিবার সাথে ভালো ব্যাবহার করতে আরম্ভ করেছো?

আমি:- তোমার মনে নেই আব্বার সামনে ভালো ব্যাবহার করার অভিনয় করতে হবে। তুমি কিন্তু তোমার কাজটা চালিয়ে যাবে আম্মা তো আমাদের সাথে আছে তাহলে আর চিন্তা কিসের?

ভাবি:- হ্যা একদম ঠিক বলছো! আর শুনো শ্বশুড় বাড়ীতে গিয়ে সবার সাথে খারাপ আচরন করবে। বিশেষ করে সবাইকে দেখিয়ে তসিবার সাথে তাহলে ওরা বুঝবে তুমি তসিবাকে মেনে নিতে পারোনি তখন ওরা নিজে থেকে তসিবাকে নিয়ে যাবে।

আমি:- হ্যা একদম সত্য কথা বলছো আমি তাই করবো যাই এখন রুমে গিয়ে তৈরি হয়ে নেই কেমন। ভাবির প্লান মতে কাজ করলে তসিবা এক মাসে পালাবে। কথা গুলি ভাবতে ভাবতে যেই দরজা সামনে এসেছি তখনি দেখি রুমের ভিতর থেকে কথার শব্দ শুনা যাচ্ছে। আরে আমার রুমে তো বোবা বউটা ছাড়া আর কেও নেই তাহলে কথার শব্দ গুরি বেশে আসঁছে কোথা থেকে। তাড়াহুরা করে রুমে ঢুকে দেখি তসিবা ডেসিন টেবিলের সামনে বসে সাজুগুজু করছে। রুমের চারদিকে ঘুরে ঘুরে তাকালাম কাওকে তো দেখছিনা তাহলে রুমে কথা কে বলছে। তখনি মহারানী হাত তালি দিয়েছে আমি তাকিয়েছি বাহা তসিবাকে খুব সুন্দর লাগছে আমি তাকিয়ে আছি ওর দিকে তখনি চুটকি বাজিঁয়েছে। কি হয়ছে এমন করছো কেনো? (তখনি কাগজ হাতে ধরিয়ে দিয়েছে)

তসিবা:- কিছু বলবেন আর আমাকে কেমন লাগছে?

আমি:- রুমে কথা বলছে কে? আর তুমি তো বোবা তাহলে কথার শব্দ আসলো কোথা থেকে? (তখন কাগজে লিখে দিয়েছে)

তসিবা:- আমি তো কোনো কথার শব্দ শুনিনি আমার মনে হয় বাহিরে কেও কথা বলছে ঐটা শুনতে পেয়েছেন। এখন বলেন আমাকে কেমন লাগছে?

আমি:- পেত্নির মত লাগছে! তোমাকে দেখলে আমার ভুমি ভুমি ভাব শুরু হয়ে যায়। দেখি সরো তসিবা চেহেরাটা কালো করে নিয়েছে আমি উয়াশ রুমে যাবো তখনি আমার হাতে আরেকটা কাগজ ধরিয়ে দিয়ে চলে গেছে। (কাগজটা হাতি নিয়ে দুই টুকরা করে ছিড়ে ফেলে দিয়ে উয়াশ রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। কিছুক্ষনের মধ্যে বের হয়ে এসেছি তখনি এক টুকরা কাগজের লিখা চোখে পড়লো আমি দুই টুকরা কাগজ হাতে নিয়ে পড়তেছি)

তসিবা:- আপনি তো দেখছি ঠিক করে মিথ্যা বলতে পারেন না! আপনার চোখ বলে আপনি আমাকে খুব ভালোবাসেন কিন্তু বাহির থেকে আমার সাথে এমন ব্যাবহার করেন। আমি জানি আমি অনেক সুন্দর তাই তো আপনি বার বার আর চোখে আমার দিকে তাকিয়ে থাকেন। আজ নয়ত কাল আমাকে ভালোবাসবেন কিন্তু এমন না হয়ে যায় আপনি আমাকে ভালোবেসেছেন কিন্তু আমি আপনার জীবন থেকে অনেক দূরে হারিয়ে গেছি।

আমি:- ঘুরার ডিম বোবা মেয়েটা বলে কি? আজকে তোমার বাপের বাড়ীতে তোমার জন্য কি অপেক্ষা করছে তুমি তা চিন্তা করতে পারবেনা। তৈরি হয়ে রুম থেকে বের হয়ে নিছে গেছি। তসিবা সহ সবাই দাঁড়িয়ে আছে আমি নিছে যেতেই।

আব্বা:- সৌরভ দুই দিন থেকেই বউমাকে নিয়ে চলে আসবি। আর শুন ঐ বাড়ীতে তসিবার সাথে ভালো ব্যাবহার করবি ওর মা বাবার সাথে সুন্দর করে কথা বলবি কথা গুলি মনে থাকে যেনো?

আমি:- ঠিক আছে! সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাহিরে এসেছি। আমি গিয়ে একটা সি এন জি নিয়ে এসেছি। তসিবা সি এন জি দেখে বেশি একটা খুশি হয়নি ওর ইচ্ছে ছিলো বাইকে করে আমার সাথে যাবে কিন্তু হলোনা। ওর মুখ ছোট করে রাখছে আমার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে যদি কথা বলতে পারতো তাহলে বুঝা যেত। কি হলো দাঁড়িয়ে আছো কেনো এসো তখনি রাগ করে এসেছে সি এন জির ভিতরে। ঘন্টা দুইয়েক পরে তসিবাদের বাড়ীর সামনে এসেছি তসিবা নেমে আগে আগে বাড়ীর দিকে চলে গেছে আমি ভাড়া দিয়ে পিছু পিছু গেছি। তসিবা কলিং বেল বাজিঁয়েছে প্রায় দশ মিনিট পরে দরজা খুলছে ওর মা।

শ্বাশুড়ি:- এত কলিং বেল বাজাতে হয় নাকী? একটু দাঁড়িয়ে থাকলে কি হয়? (শ্বাশুড়ির কথা শুনে তো পুরায় অভাক হয়ে গেছি। ওনি কোথায় মেয়েকে বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরবে তানা ওনি উল্টা তসিবাকে বকা ঝকা করতেছে। আর আমি যে ওনার মেয়ের স্বামী তার কোনো গুরুত্ব নেই)

আমি:- আস্সালামু আলাইকুম শ্বাশুমা কেমন আছেন আপনি?

শ্বাশুড়ি:- গাইয়া নাকী এই শুনো আমাকে আন্টি বলবে শ্বাশুমা টাশ্বামা বলবে না। তসিবা গিয়ে তোদের জন্য রান্না করে নে আমি একটু পার্লার থেকে আসি সন্ধায় আমার একটা পার্টিতে যেতে হবে।

আমি:- মানে এখন রান্না করবে তাহলে খাবো কখন? আর রান্না তসিবা করবে কেনো?

শ্বাশুড়ি:- শুনো বেশি কথা বলবেনা তসিবা রান্না করবেনা তো রান্না কি আমি করবো? চাকরানী তো চাকরানীর কাজ করবে বেশি কথা না বলে দুই দিন থেকে চুপ চাপ চলে যাবে। তসিবা দাঁড়িয়ে আছিস কেনো যা গিয়ে রান্না গুলি করে নে আর তোর স্বামীকে বলবি কথা কম বলতে। (তসিবা মাথা নাড়িয়ে হ্যা সূচক উত্তর দিয়েছে)

আমি:- থাকবোনা আমি এই বাড়িতে চলে যাবো এখুনি বলে ব্যাগ হাতে নিয়ে চলে আসতেছি তখনি তসিবা আমার হাতটা ধরেছে আর দুই চোখ দিয়ে পানি ফেলতেছে। আমি দাঁড়িয়ে গেছি তসিবা আমাকে টেনে উপরে নিতেছে তখনি একটা ছেলে সিঁড়ি দিয়ে নামতেছে।

ছেলে:- আরে তসিবা তুই এসেছিস জানিস এই দুই দিন তকে আমি অনেক মিস করেছি। সত্যি বলতে তকে ছাড়া আমার একদম ভালো লাগেনা যাক এখন তো সব কিছু শিখে গেছিস এখন আমি চাইলে আর না করিস না কেমন? (তসিবা আমার হাতটা একদম শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে! তসিবার দিকে তাকিয়ে দেখি তসিবা ভয়ে একদম কাতর হয়ে গেছে)

আমি:- আমি তো জানি তসিবার কোনো ভাই বোন নেই তাহলে আপনি কে?

ছেলে:- আমি নাদিম আমাকে কি করে চিনবেন আমি তো বিয়ের দিন ছিলাম না। থাকলে আর বিয়েটা করা লাগতো না। আমি তসিবার মামাত ভাই তসিবা শুন তোর রুমটাতে এখন আমি থাকি তুই তো মাত্র কিছুদিন থাকবি এখানে। গেস্ট রুমটাতে যতদিন ইচ্ছে ততদিন তোরা থাকিস কেমন।

তসিবা মাথা নাড়িয়ে আমাকে টেনে রুমে নিয়ে গেছে রুমে ঢুকে তো আমি পুরায় অভাক এত বড় লোক মেয়ের রুম একটা কুরের ঘরের চেয়েও খারাপ। তখনি আমি তসিবাকে বলি এই তুমি বাসর ঘরে কি বলেছিলে মনে আছে? (তখনি তসিবা মাথা নাড়িয়ে হ্যা সূচক উত্তর দিয়েছে) তখন তো বলছিলে খাটের উপর ছাড়া তোমার ঘুম আসেনা কিন্তু তোমার রুমে তো কিছুই নেই? আচ্ছা তুমি এই বাড়ীর মেয়ে না চাকরানী? তসিবা একটা কাগজে লিখে আমার হাতে দিয়েছে।

তসিবা:- মাত্র তো দুই তিন থাকবো। প্লিজ দয়া করে আমার দিকে তাকিয়ে আপনি এখানে নিজেকে মানিয়ে নেন।

আমি:- তসিবার দিকে তাকিয়ে আছি তসিবা কান্না করে যাচ্ছে আমি ব্যাগটা রেখে ওর চোখের পানি গুলি মুছে দিলাম। তসিবা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ওকে তুমি কোনো চিন্তা করোনা আমি মানিয়ে নিবো মাত্র তো দুই দিন তখনি তসিবা আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। এর আগে রিপা আমাকে অনেক বার জড়িয়ে ধরেছে কিন্তু আজ যে ফিল হচ্ছে তা কোনো দিন হয়নি যখনি আমি তসিবাকে জড়িয়ে ধরতে যাবো তখনি নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে দুই হাত জোর করে ক্ষমা চেয়ে চলে গেছে। আমি চুপ চাপ দাঁড়িয়ে আছি কিছুক্ষণ পর নিচে গিয়ে দেখি তসিবা রান্না করছে আর নাদিম তসিবাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে রাখছে তসিবা নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করছে কিন্তু পারতেছেনা। আমি তাড়াতাড়ি করে রান্না ঘরের সামনে গেছে আমাকে দেখে নাদিম তসিবাকে ছেড়ে দিয়েছে আর তসিবা দৌরে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরেছে আমি তসিবাকে ছাড়িয়ে গিয়ে নাদিমের কালার টেনে ধরে হিচরে ফ্লোরে ফেলে দিয়ে ওকে গুশি মারতেছি তখনি তসিবার মা বাবা দুজনে ভিতরে এসেছে।

শ্বশুড়:- সৌরভ কি হচ্ছে এসব তুমি নাদিমকে মারতেছো কেনো?

আমি:- জানেন ও তসিবার সাথে কি করতে চাচ্ছিলো? আমি তো ওকে মেরে ফেলবো বলে আরো গুশি দিতে লাগলাম তখনি আমার শ্বশুড় এসে টেনে আমাকে তুলে নিয়েছে।

শ্বাশুড়ি:- তোমার এত বড় সাহোস তুমি আমার ভাইফুর গায়ে হাত তুলেছো?

আমি:- আপনার ভাইফু আগে নাকী মেয়ে আগে?

শ্বাশুড়ি:- কি করেছে ও আগে ঐটা তুমি বলো?

নাদিম:- ফুপি আমার কোনো দোষ নেই তসিবা নিজে এসে আমাকে রান্না ঘরে ইশারা করে ডেকে আনছে।

আমি:- তসিবা তকে ডাকবে কেনো তোর থেকে কত সুন্দর আমি। আমার মত একটা বর থাকতে তকে ডাকতে যাবে? দেখুন আঙ্কেল আপনার মেয়েকে কি এমন মনে হয়?

শ্বাশুড়ি:- দুই দিনে এত ভালোবাসা তসিবার প্রতি।তোমার চেয়ে আমরা বেশি চিনি জানি তসিবার সম্পর্কে আর ভালোকরে চিনি। মেহমান হয়ে এসেছো মুখ বুঝে থাকতে পারলে থাকবে না হলে চলে যাবে। তসিবা মেয়ে হিসাবে বেশি একটা সুবিধার নয় যদি পারো ওর কাছ থেকে দূরে থাকলে ভালো।

আমি:- নিজের মেয়ের সম্পর্কে এসব বলতে আপনার লজ্জা করেনা?

শ্বাশুড়ি:- লজ্জা করবে কেনো যে যেমন তার সম্পর্কে সেইটা বলা উচিত। এখানে নিজের মেয়ে আর পরের মেয়ে হলে বা কি আসে যায়।

আমি:- আঙ্কেল আপনি কিছু বলছেন না কেনো?

শ্বশুড়:- ওর মা তো সব বলছে তাহলে আমি আর কি বলবো?

আমি:- যেই মেয়ের মা বাবা তার সম্পর্কে খারাপ বলে অনন্ত তার সাথে আমি জীবন কাটাতে পারবোনা। সরি আঙ্কেল আপনাদের মেয়ে যেহেতু এমন ওকে আমি আমার সাথে নিতে পারোনা। তসিবার সাথে সারা জীবন সংসার করা আমার পক্ষে সম্ভব না। তসিবা তোমার বাবা মা যা বলছে তা তো মিথ্যা হতে পারেনা তাহলে তুমি আমাকে কি দিবে এইটা আমার বুঝা হয়ে গেছে তুমি থাকো কিছু দিনের মধ্যে ডির্ভোসের কাগজ পেয়ে যাবে।

শ্বাশুড়ি:- বলছিনা আগে ছেলেকে সব জানিয়ে তারপর বিয়ে দিতে এখন দেখলে তো শুধু শুধু আমাদের কত গুলি টাকা নষ্ট হয়েছে। এখন এই মেয়েকে আমার ভাইফুর সাথে তুমি বিয়েটা দিয়ে দিও। সৌরভ তুমি কালকে তসিবাকে ডির্ভোসের কাগজটা তৈরি করে পাঠিয়ে দিও।

আমি:- সময় লাগবে তবে খুব তারা তারি দিয়ে দিবো। আচ্ছা আমি যাই আর আন্টি আপনাকে ধন্যবাদ আমাকে সত্যিটা বলার জন্য।
আমি কথা গুলি বলে রুমের দিকে হাটা দিয়েছি তসিবা পিছু পিছু আসতেছে আমি রুমে এসে ব্যাগ হাতে নিয়ে বেরিয়ে আসবো তখনি তসিবা আমার হাতটা ধরেছে। হাত ধরেছে কেনো? তখনি তসিবা বলে,,,

তসিবা:- আপনাকে কিছু কথা বলার ছিলো সেই গুলি বলা শেষ হলে আপনি চলে যায়েন।

আমি:- তুমি কথা বলতে পারো?

তসিবা:- হ্যা বলতে পারি কিন্তু সবার সাথে কথা বলানা যাকে আপন মনে হয় তার সাথে বলতে ইচ্ছে হয়। আমার কথা গুলি আপনার শুনা শেষ হলে আপনি চলে যায়েন প্লিজ।

আমি:- বলো কি কথা বলতে চাও?

তসিবা:- বলছি শুনেন! তখন তসিবার কথা শুনে আমি বাকরুদ হয়ে গেলাম! নিজের মা এমন হতে পারে-----

To be continue---------
(💝 ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট করবেন। এবং সবাই এড করে নিন 💝)




# নব-দম্পতি
#পর্ব_০৪
#ক্ষুদে_লেখক
!!
আম্মু চাইনি আমার ভালো কোনো ছেলের সাথে বিয়ে হক। আম্মু চাইছে একটা বোকা আর হাবা টাইপের ছেলের সাথে আমার বিয়ে দিতে। যদিও নাদিম আমাকে বিয়ে করতে চাইছে কিন্তু আমি রাজি হয়নি তাই আম্মু আমার মুখে গরম তৈল ছুড়ে মারছে আমি ঘুরে গেছি আর পিটে পড়ছে এই দেখুন পিটের দাগ গুলি এখনো শুকাইনি। তসিবা তার চুল গুলি সরিয়ে আর চুড়িদার চেইনটা খুলে পিটটা দেখিয়েছে। আমি দেখে পুরাই থমকে গেছি আমার চোখের কোনে পানি চলে এসেছে।

আমি:- কিন্তু তোমার মা তোমার সাথে এমন কেনো করছে?

তসিবা:- আসলে ওনি আমার আপন মা নয়। আমার আপন মা আমাকে ছোট বেলা রেখে চলে গেছে।

আমি:- তোমার মা মারা গেছে?

তসিবা:- নাহ আব্বুর সাথে ঝগড়া করে ডির্ভোস দিয়ে চলে গেছে। আম্মু আমাকে সাথে নিয়ে যেতে চাইছে কিন্তু আমার দাদা দেয়নি। দাদা মারা যাবার আগে ব্যাংকে ৫০ লক্ষ টাকা আর এই বাড়ীটা আমার নামে লিখে দিয়েছে। যানেন নাদিম অনেক বার আমার সাথে এমন করছে আমি কিছু বললে বরং আম্মু আমাকে মারদর করতে থাকতো।

আমি:- তোমার বাবা কিছু বলেনা?

তসিবা:- আব্বু কিছু বললে বরং আব্বুকে ওনার ভাই বোন সবাইকে ডেকে এনে গালা গালি করে আর বলে যদি বেশি বেশি করি তাহলে আমাকে দিয়ে নগ্ন ভিডিও করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দিবে।
এই জন্য আব্বু চুপ চাপ থাকে! আপনার আব্বুর সাথে আব্বু সব কিছু খুলে বলছে এরপর ওনি আমার সাথে আপনার বিয়েটা তাড়াহুরা করে দিয়ে দেয়।

আমি:- তুমি বিয়ের দিন কোনো কান্না করোনি কেনো?

তসিবা:- আম্মু মানা করেছে আবার আমি চিন্তা করে দেখলাম মেকাপ করে অনেক সুন্দর লাগছে যদি কান্না করি তাহলে তো মেকাপ গুলি নষ্ট হয়ে যাবে আর আমাকে দেখতে খারাপ দেখাবে। বাসর ঘরে যদি আপনি আমাকে দেখে পছন্দ না করেন তাই।

আমি:- তোমার মাথায় বুদ্দি আছে। আচ্ছা তুমি যখন বাড়ীতে একা থাকতে তখন নাদিম তোমাকে কিছু করতে চাইনি?

তসিবা:- হ্যা চাইতো কিন্তু আব্বু বাড়ীতে না থাকলে আমি সারাক্ষন রুমে দরজা লাগিয়ে ভিতরে একা বসে থাকতাম। সবার কাছে বলে আমি বোবা কাজকাম কিছুই পারিনা। আপনি বিশ্বাস করেন আমার মধ্যে কোনো খারাপি নেই আমি একদম ভালো একটা মেয়ে। আমার সাথে আপনি ছয় মাস সংসার করে দেখেন যদি আমাকে খারাপ মনে হয় তাহলে আপনি আমাকে ডির্ভোস দিয়ে দিয়েন প্লিজ।

আমি:- বুঝতে পারছি তুমি সব কিছু পরিস্থিতির সিকার। কিন্তু আমি রিপা নামে একটা মেয়েকে ভালোবাসি। (তখনি চেয়ে দেখি তসিবা একদম চুপসে গেছে কি বলবে ভাষা খুঁজে পাচ্ছেনা)

তসিবা:- আপনি বিয়ে করেছেন তা যেনেও রিপা আপনাকে এখন ভালোবাসে আর বিয়ে করতে রাজি আছে?

আমি:- রিপা এখনো জানেনা আমার বিয়ের কথা। এখন রিপাকে কিছু বলতে চাইনা আগে তোমার সাথে ডির্ভোস হয়ে যাক পরে রিপাকে বুঝিয়ে বলবো। তখন রিপা সব মেনে নিবে। আচ্ছা আমি যদি তোমার বাবা আর তোমার সব কিছুতে অধিকার ফিরিয়ে দেয়। আর তোমার সৎ মা তোমার সাথে ভালো ব্যাবহার করে তাহলে কি তুমি আমাকে ডির্ভোস দিতে রাজি হবে? (তসিবা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে)

তসিবা:- যদি আমার বাড়ীতে আমি সব অধিকার ফিরে পায় আর মা আমাকে নিজের মেয়ের মত আদর ভালোবাসে তাহলে আপনাকে ডির্ভোস দিবো কথা দিলাম।

আমি:- ঠিক আছে তাহলে তুমি এই কাগজ গুলিতে সাইন করে দাও।

তসিবা:- কিসের কাগজ?

আমি:- এই তো ডির্ভোসের এপ্লিকেশন করে রাখবো আগে থেকে। যদি তাড়াতাড়ি হয়ে যায় তাহলে তাড়াতাড়ি আমাদের ডির্ভোস হয়ে যাবে।

তসিবা:- দেন করে দিতেছি! (কাগজে সাইন করে দিয়েছে) শুনেন আমরা কিন্তু স্বামী স্ত্রীর মত সংসার করবো আর দুজনে এক সাথে থাকবো।

আমি:- এক সাথে থাকবো তবে রাতের বেলা নয়। আচ্ছা তুমি শাড়ী পরে নাও তোমাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাবো।

তসিবা:- ও ভালো কথা কাওকে বলিয়েন না কিন্তু আমি কথা বলতে পারি! যদি আম্মু জানে তাহলে আমাকে আস্ত রাখবেনা একদম মেরে ফেলবে।

আমি:- এখন থেকে তুমি তোমার মনের ভাব নিজের মত করে প্রকাশ করবে। যতদিন আমার কাছে থাকবে ততদিন তোমার সব দায়িত্ব আমার। কথা দিলাম আজ থেকে তোমার চোখে এক ফোটা পানি আনতে দিবোনা কাওকে। (তখনি তসিবা আমাকে জড়িয়ে ধরে সোজা ঠোটে কিস করে বসেছে। এক মিনিটের জন্য পুরু পৃথিবীটা থমকে গেছে আমার। মনে হচ্ছে এর চেয়ে সূখ আর কিছুই নেই) তসিবা তুমি এইটা কি করলে?

তসিবা:- ছবিতে অনেক দেখছি তাই বাস্তবে করে দেখলাম কেমন লাগে। জীবনের প্রথম জড়িয়ে ধরেছি আপনাকে আর কিস করেছি আপনাকে।

আমি:- আজকের মত ক্ষমা করে দিলাম এরপর থেকে এমন বাজে কাজ আর কোনো সময় করবেনা। এখন শাড়ীটা পড়ে তৈরি হয়ে নাও রাতে বাহিরে ডিনার করবো আর ডাক্তারের সাথে দেখা করে আসবো।

তসিবা:- সত্যি আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবেন?

আমি:- হ্যা যাবো! তসিবা চোখের পানি মুছে দিয়েছি যাও এখন তৈরি হয়ে নাও।

তসিবা:- চুড়িদার পরে যায় পিটের ধাগ গুলি খারাপ দেখায়। আর শাড়ী পড়লে তো সব কিছু দেখা যাবে তাইনা?

আমি:- বুঝতে পারছি ঠিক আছে তুমি তৈরি হয়ে এসো আমি নিছে গিয়ে কিছুটা গন্ডগোল পাকায়।

তসিবা:- মানে?

আমি:- তুমি বুঝবেনা! রুম থেকে বেড়িয়ে নিছে এসেছি। দেখি নাদিম শ্বাশুড়ি বসে হাসা হাসি করতেছে। আমাকে দেখে শ্বাশুড়ি বলে,,,

শ্বাশুড়ি:- সৌরভ তোমার জন্য অনেক কষ্ট হচ্ছে এমন একটা চরিত্রহীন মেয়েকে বিয়ে করতে হয়েছে তোমাকে। যাক এখন তো সব যেনে গেছো তসিবাকে ডির্ভোস দিয়ে ভালো একটা মেয়েকে বিয়ে করে নিও কেমন। আচ্ছা তাহলে তুমি এখন চলে যাচ্ছো?

আমি:- আপনাকে দেখে আমার রিনা খানের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। আপনি যদি চলচিত্রে অভিনয় করেন তাহলে পাক্কা ভিলেনের খেতাপ পেয়ে যাবেন। শুনেন আজকের পর যদি এই বাড়ীতে আপনাকে আর আপনার ভাইফুকে দেখিনা তাহলে কপালে অনেক খারাপি আছে।

শ্বাশুড়ি:- মানে কি বলতে চাচ্ছো তুমি?

আমি:- কিছুনা! এখন আপাদত একটু বেরহবো তসিবাকে সাথে নিয়ে।

নাদিম:- তুমি এই খারাপ মেয়েটাকে নিয়ে বের হবে? (তখনি নাদিমকে মুখ চেপে ধরেছি আর বলতেছি)

আমি:- ফের যদি তসিবাকে নিয়ে খারাপ কিছু বলিস তাহলে মুখ ভেঙে দিবো আর যদি ওকে ভুল করে ছুয়ার চেষ্টা করিস তাহলে হাত ভেঙে দিবো। বাহির থেকে এসে যেনো দেখি তসিবার রুমটা খালি করা রাতে আমরা তসিবার রুমে ঘুমাবো।

শ্বাশুড়ি:- এই ছেলে তোমার সাহোস তো দেখছি কমনা আমার সামনে আমার ভাইফুকে মুখ চেপে ধরে রাখছো?

আমি:- এখন তো ধরে রাখছি যদি কালকে থাকে তাহলে একদম জোরা লাগিয়ে দিবো দুই ঠোট। শ্বাশুমা এখনো সময় আছে ভালো হয়ে যান। তখনি চেয়ে দেখি তসিবা একদম সুন্দর করে সেজে গুজে নিছে নেমে আসছে।

তসিবা:- আমাকে কেমন লাগছে?

আমি:- হ্যা অনেক সুন্দর! এখন চলো শ্বাশুড়ি দাঁড়িয়ে আছে চুপ করে। তসিবা আমার হাতটা জড়িয়ে ধরেছে আমরা দুজনে বাহিরে এসেছি।

তসিবা:- আমার বাইকে উঠার অনেক ইচ্ছা আমি কখনো বাইকে উঠিনি আব্বুর একটা পুরুনো বাইক আছে আপনি আমাকে নিয়ে যাবেন বাইকে করে?

আমি:- চাবি পাবো কোথায়? (তখনি তসিবা চাবিটা এগিয়ে দিয়েছে)

তসিবা:- ঐ বাইকটা আপনি নিয়ে আসেন একটু কষ্ট করে প্লিজ।

আমি:- ওকে! তসিবার ছোট ছোট আব্দার গুলি ভালো লাগছে। বাইকে ধূলো পড়ে আছে কোনো মতে কিছুটা পরিস্কার করে নিয়েছি। আমি বসেছি পেছনে তসিবা আমাকে জড়িয়ে ধরে বসেছে। কিছুক্ষনের মধ্যে ডাক্তারের কাছে চলে এসেছি। একজন স্কিন বিশেষসজ্ঞ মহিলা ডাক্তারকে তসিবার পিটটা দেখিয়েছি। ওনি দেখে কিছু মলম জাতীয় মেডিসিন দিয়েছে।

ডাক্তার:- মিস্টার সৌরভ আপনি আপনার স্ত্রীর প্রতি একটু বেশি কেয়ার করবেন। রাতে ঘুমানোর সময় মলমটা লাগিয়ে ঘুমাবেন আর মেডিসিন গুলি নিয়ম করে খায়িয়ে দিবেন। আর খেয়াল রাখবেন ঘুমানোর সময় যেনো পিট উপরের দিকে থাকে।

আমি:- ঠিক আছে!

ডাক্তার:- আশা করি খুব তাড়াতাড়ি দাগ গুলি মুছে যাবে।

আমি:- ধন্যবাদ ডক্টর আচ্ছা তাহলে আমরা আসি কেমন? ডাক্তারের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তসিবাকে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্ট এসেছি। তসিবাকে কিছুটা নার্ভাস লাগছে চেহারা ঘামতেচে। তসিবা তুমি ঠিক আছো?

তসিবা:- হ্যা ঠিক আছি প্রথম এমন যায়গাতে এসেছি তাই কিছুটা ভয় করছে।

আমি:- দূর বোকা মেয়ে আমি আছিনা! তসিবার হাতটা ধরেছি তখনি দেখি তসিবার নার্ভাসটা কেটে যাচ্ছে আমি আরো শক্ত করে ধরে রাখছি। তখনি পেছন থেকে কেও একজন এসেছে আমার সামনে এসে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমি তাকিয়ে তসিবার হাতটা ছেড়ে সোজা দাঁড়িয়ে গেছি আমার হাত পা ভয়ে কাপা কাপি করছে------

To be continue---------
(ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবেন। আগের পর্বগুলো আমার টাইমলাইনে দেওয়া আছে)



# নব-দম্পতি
# পর্ব ০৫
#ক্ষুদে_লেখক
!!
সৌরভ রিপার সাথে তোমার ব্রেকাপ হয়ে গেছে? আর তুমি বিয়ে করেছো কবে? রিপা জানে তুমি বিয়ে করেছো যে? (আমি একদম ভয়ে চুপসে গেছি কি বলবো কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা তখনি রিপার বড় বোন রুসি আপু দমক দিয়ে বলতেছে) কি হলো বলো? তুমি আমার বোনের সাথে প্রেম করে এখন অন্য মেয়ে রেস্টুরেন্ট এসে রাতের ডিনার করতেছো আমি তোমার হাত ধরাটা ছবি তুলে নিয়েছি। রিপার কাছে ছবি গুলি পাঠিয়ে দিবো কি?

আমি:- আপু প্লিজ আপনি এই কাজ করবেন না! আপনি আমার কথাটা শুনেন আগে প্লিজ।

রুসি:- কোনো কথা শুনবোনা আজকে আরো আমি আব্বুকে বলছি তোমার আর রিপার সম্পর্কের কথা আর তুমি কিনা এখানে অন্য মেয়ে নিয়ে ডিনার করতে এসেছো? (তখনি তসিবা বলে,,,)

তসিবা:- আপনার সমস্যা কি বলেন তো কখন থেকে অন্য মেয়ে অন্য মেয়ে বলে যাচ্ছেন।

আমি:- তসিবা তুমি চুপ থাকো।

তসিবা:- চুপ থাকবো কেনো? আর আপনি বলে দেন আমি আপনার বউ তাহলে তো সব জামেলা শেষ।

রুসি:- কি আমি জামেলা আমার বোন জামেলা। সৌরভ আজকের পর তুমি আমার বোনের সাথে কোনো রকম যোগাযোগ করবেনা। যদি আমার বোনের কিছু হয় তাহলে তোমাকে আমি ক্ষমা করবোনা বলে দিলাম।

তসিবা:- আপনি বললে হলো আমার স্বামীর কি দোষ আপনার বোনকে বলে দিবেন আমার স্বামীর সাথে যেনো কোনো রকম যোগাযোগ না করে। যদি যোগাযোগ করে তাহলে আপনার বোনের কপালে খারাপি আছে।

আমি:- তসিবা কি হয়ছে মাথা ঠিক আছে তো কেনো ঝগড়া করছো ওনি রিপার বড় বোন যাকে আমি ভালোবাসি তার বড় বোন। তোমাকে তো আমি সব বলেছি তাও তুমি কেনো এমন করছো?

তসিবা:- তো কি হয়ছে ওনি আপনাকে যাতা বলে দিবে আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকবো নাকী? এই শুনেন আপনি এখন যান আমাদের ডিনার করতে দেন। তখনি আমি তসিবাকে একটা থাপ্পড় দিয়েছি তসিবা গালে হাত দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ফেলে দিয়েছে।

আমি:- এবার হয়ছে আর যদি চুপচাপ থাকতে না পারো তাহলে বেরিয়ে যাও তাও আমার ভালোবাসার সম্পর্কটা নষ্ট করোনা প্লিজ।( তখনি তসিবা সোজা দরজার দিকে হেটে চলে গেছে আমি তাকিয়ে আছি তসিবা বেরিয়ে গেছে রেস্টুরেন্ট থেকে)

রুসি:- তোমার বউ তোমাকে একটু বেশি ভালোবাসে দেখছি। যাক বউ নিয়ে থাকো আমার বোনের সাথে যোগাযোগ না করলে খুশি হবো।

আমি:- প্লিজ আপু আপনি আমার কথাটা একবার শুনেন। রুসি আপুকে অনেক রিকুয়েস্ট করার পর ওনি রাজি হয়েছে। তারপর আমি তসিবার সাথে যা যা বলছি সব কিছু ওনাকে বুঝিয়ে বলছি আর রুসি আপুর কাছ থেকে ছয় মাসের সময় নিয়েছি।

রুসি:- শুনো সৌরভ তোমার প্রতি আমার বোন রিপা একটু বেশি দূর্বল তাই তোমাকে এই ছয় মাস সময় দিয়েছি। এই ছয় মাসের মধ্যে তসিবাকে ডির্ভোস দিয়ে দিবে কথাটা মনে থাকে যেনো?

আমি:- হ্যা থাকবে আপনি কোনো চিন্তা করবেন না। রুসি আপু চলে গেছে তখনি তসিবার কথা মনে পরেছে। আমি তাড়াতাড়ি করে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়েছি। তসিবাকে কোথাও দেখছিনা এখন কোথায় খুঁজবো মেয়েটাকে মাথাটাই কোনো কিছু কাজ করছেনা। দেখি তো রেস্টুরেন্টের ভিতরে বাগানটাই আছে কিনা? বাগানটার চারদিকে খুঁজতে আরম্ভ করেছি যখনি পেছনে গেছি দেখি একটা ব্যাঞ্চে তসিবা বসে আছে আর আকাঁশে চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে। তসিবাকে দেখে আমার প্রানটা মনে হয় ফিরে এসেছে। আমি আস্তে আস্তে ওর কাছে গিয়ে ব্যাঞ্চে উপর যখনি তসিবার পাশে বসেছি। ঠিক তখনি তসিবা উঠে চলে যাচ্ছিলো তখনি আমি ওর হাত ধরে নিয়েছি।

তসিবা:- হাত ধরেছেন কেনো ছারেন আমাকে।

আমি:- প্লিজ রাগ করোনা আগে আমার কথাটা শুনো প্লিজ।

তসিবা:- আমি কে আমি কার সাথে রাগ করবো? আমার কপালটা খারাপ তানা হলে ছোট বেলা মা ছেরে চলে যাই আর সারা জীবন মানুষের মারদর খেয়ে বড় হতে হয়। ভাবছি বিয়ের পর স্বামী আমাকে অনেক ভালোবাসবে আর সূখে রাখবে কিন্তু এখন স্বামীও আমাকে মারে।

আমি:- সরি এই কান ধরতেছি আর জীবনেও তোমার গায়ের উপর হাত উঠাবোনা এবারের মত ক্ষমা করে দাও প্লিজ।

তসিবা:- আপনি আমাকে বকা দিতে পারেন আমাকে ঘৃনা করতে পারেন কিন্তু আমাকে থাপ্পড় দিবেন এইটা আমি কোনো দিন কল্পনা করিনি।

আমি:- বলছি তো সরি আর কান ধরেছি এবারের মত ক্ষমা করে দাও প্লিজ।

তসিবা:- আমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছেন কেনো আমি তো আপনার কেও না। সমস্যা নেই আমি আপনাকে খুব তাড়াতাড়ি মুক্ত করে দিবো তখন আপনার ভালোবাসার মানুষের সাথে থাকতে পারবেন। রাত অনেক হয়ে যাচ্ছে। এখন দয়া করে আমাকে একটু বাড়ীতে নিয়ে যাবেন কি?

আমি:- ঠিক আছে চলো। তসিবাকে নিয়ে বাইকের সামনে এসেছি। তসিবা তুমি দ্বাড়াও আমি আসতেছি।

তসিবা:- কোথায় যাবেন?

আমি:- এই এখানে! তসিবাকে রেখে আমি রেস্টুরেন্টের ভিতরে এসে কিছু খাবার পার্সেল নিয়ে এসেছি।

তসিবা:- এই গুলো কি আনছেন?

আমি:- খাবার এনেছি বাসায় গিয়ে দুজনে খাবো। তসিবা কিছু বলেনি আমি বাইকে বসেছি তসিবা বসেছে তবে কিছুটা ফাক রেখেছে। আমি ব্রেক মেরেছি তখনি তসিবা আমাকে জড়িয়ে ধরেছে

তসিবা:- এইটা কি হলো?

আমি:- যদি পরে যাও তখন তো আমার সমস্যা হবে! তসিবা চুপ করে বসে আছে আমি বাইক চালাচ্ছি ভালোই লাগছে রাতের সুন্দরয্যটা। ঘন্টা খানেক পরে বাড়ীতে এসেছি কলিং বেল চাপ দিয়েছি কিছুক্ষণ পরে তসিবার বাবা এসে দরজাটা খুলে দিয়েছে।

শ্বশুড়:- সৌরভ এত দেরি করলে কেনো?

আমি:- ডাক্তারের সাথে কথা বলতে গিয়ে দেরি হয়ে গেছে। তখন চেয়ে দেখি তসিবার মা সহ অনেক লোক বসে আছে। আমাকে দেখে সবাই দাঁড়িয়ে গেছে।

শ্বাশুড়ি:- ভাইজান এই ছেলেটা আমাকে অপমান করেছে। তখনি একজন লোক আমার দিকে এগিয়ে আসছে আর তসিবা ভয়ে একদম কাতর হয়ে আছে।

আমি:- তসিবা ওনারা কে? (তসিবা চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে তখনি জুড়ে দমক দিয়ে বলছি) কানে শুনতে পাওনি আমি কি বলছি? ওনারা কে এখানে এসেছে কেনো?

তসিবা:- আম্মুর ভাই বোন আমার মামা লাগে।

আমি:- তার মানে ওদের ডেকে আনছে! তখনি লোক এসে আমার সামনে দাঁড়িয়েছে।

ঐ তুই আমার বোনকে আর ছেলেকে কি বলেছিস?

আমি:- বলিনি করেছি আপনার ছেলেকে মেরেছি কারন সে আমার বউকে খারাপ কথা আর খারাপ আচরন করেছে। আচ্ছা আপনার বউকে বা আপনার মেয়েকে যদি কেও খারাপ কিছু বলে বা করে তাহলে আপনি কি করবেন?

আমার পরিবারের সাথে ঐ মেয়েটার তুলনা করেছিস?

আমি:- কেনো তসিবা কি করেছে আপনাদের? তসিবা ইচ্ছে করলে আপনাদের সবাইকে জেলের ভাত খাওয়াতে পারে। আজকে আপনাদের সবার নামে আমি জিডি করে এসেছি। যদি তসিবার কিছু হয় তাহলে দায় থাকবেন আপনারা।

শ্বাশুড়ি:- ভাই তোরা ওর কথা বিশ্বাস করিসনা সব মিথ্যা বলছে কোনো জিডি ফিডি করেনি।

আমি:- আচ্ছা আপনার বোনের তো কোনো সন্তান নেই যদি মারা যায় তাহলে সব সম্পত্তি তসিবা পাবে তাহলে কেনো আপনারা অন্যের সম্পত্তির জন্য এমন করছেন?

হ্যা কথাটা তো মন্দ বলোনি আপা তোর কোনো দিন সন্তান হবেনা তাহলে এই ঝগড়া ঝাটি করে কি লাভ। বরং তসিবার সাথে মিলে মিশে থাকাটা আমাদের ভালো হবে।

আমি:- হ্যা একদম সত্যি বলছেন দেখুন তসিবা তো এই বাড়ীতে থাকবেনা ও থাকবে ওর স্বামীর বাড়ীতে। যদিও নতুন নতুন আসবে কিছুদিন এরপর তো আর আসতে চাইবেনা। তখন তো সবকিছু আপনার থাকবে।

তসিবা:- আমার আপন মা তো ছোট বেলা আমাকে রেখে চলে গেছে আপনি তো এখন আমার মা। আমাকে ভালোবেসে একবার বুকে জড়িয়ে নেন তাহলে আমার আর কিছুই লাগবেনা।

আমি:- দেখুন তসিবা চাইলে আপনাদের রাস্তায় নামিয়ে দিতে পারে। সৎ বলতে কিছুই নেই সম্পর্কটা কেমন আছে সেইটা আগে বুঝতে হবে। জন্ম দিলে সবাই মা হয়না যারা লালন পালন করে মায়া মমতা আর স্নেহ দিয়ে বড় করে তারাই তো প্রকৃত মা।

শ্বাশুড়ি:- আমি এত সহজে সব কিছু মেনে নিবো তা কিরে ভাবছো। ভাই তোরা ওর কথা শুনছিস কেনো?

আমরা তোর সাথে নেই অনেক হয়েছে মা হারা মেয়েটার সাথে অনেক অন্যায় করেছি মা তসিবা আমাকে ক্ষমা করে দিস। এই নাদিম চল তকে আর এই বাড়ীতে থাকার কোনো দরকার নেই। সবাই চলে গেছে শ্বাশুড়ি আমার দিকে অভাক হয়ে তাকিয়ে আছে।

তসিবা:- বাহা আপনি তো একদিনে সবার মন জয় করে নিয়েছেন। উম্মা তসিবা কিস করে সোজা চলে গেছে।

আমি:- শ্বাশুমা এখনো সময় আছে সব ভুলে যান তানা হলে রাস্তায় থাকতে হবে। আংকেল আপনি কোনো চিন্তা করবেনা আমি সব ঠিক করে দিবো।

শ্বশুড়:- সত্যি বাবা তুমি অনেক ভালো কাজ করেছো আমার মেয়েটাকে সূখে দেখে যেতে পারলে আমি খুশি।

আমি:- হ্যা তসিবা অনেক সূখে থাকবে। ওনার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রুমে এসেছি দেখি তসিবা খাবার রেডি করছে। আমি ফ্রেশ হতে চলে গেছি কিছুক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে বের হয়েছি।

তসিবা:- আসেন আপনাকে আজকে নিজের হাতে খায়ে দিবো।

আমি:- থাক দরকার নেই। আমি নিজেই খেতে পারবো।

তসিবা:- তাহলে আমাকে খায়িয়ে দেন।

আমি:- পারবোনা!

তসিবা:- তাহলে আমি খাবোনা বলে তসিবা উঠে যেতেছিল আমি হাত ধরে বসিয়ে দিয়েছি।

আমি:- আচ্ছা আমি খায়িয়ে দিতেছি! তসিবা অনেক খুশি হয়েছে তসিবাকে খায়িয়ে দিতেছি। তসিবাকে খায়িয়ে দিয়ে আমিও খেয়েছি। তুমি বসো আমি সব পরিস্কার করতেছি কিছুক্ষনের মধ্যে সব কিছু পরিস্কার করে নিলাম। তসিবাকে ঔষধ গুলি খায়িয়ে পিটে মলম লাগিয়ে দিয়েছি।

তসিবা:- আমাকে কি সারা জীবন এমন ভাবে ভালোবাসবেন?

আমি:- ছয় মাস এর পরে তো ডির্ভোস। আচ্ছা এখন ঘুমাও রাত দুইটা বাজতেছে। আমি শুয়ে পড়েছি তখনি তসিবা আমার বুকের উপর মাথা রেখে শুয়েছে। কি হলো আমার বুকের উপর শুয়েছো কেনো?

তসিবা:- ডক্টর কি বলছে মনে নেই?

আমি:- মনে আছে ওনি তো আমার বুকের উপর ঘুমাতে বলেনি। দেখি উঠে আমার ঘুম আসবেনা তো।

তসিবা:- ঘুম না আসলে জেগে থাকেন আর আমার চুলের খুশবোর ঘ্রাণ শুনের আর মাথায় হাত ভুলিয়ে দেন। আমি যতদিন আপনার কাছে থাকবো ততদিন আপনার বুকের উপর ঘুমাবো।

আমি:- বুঝেছি ঘুমাও! উম্মা উম্মা আমাকে তসিবা কিস করে দিয়েছে। আমিও তসিবার কপালে কিস করে দিয়েছি তসিবা ঘুমিয়ে গেছে আমি তসিবাকে দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে গেছি ঘুম ভাঙছে একদম সকাল এগারোটার দিকে। দেখি তসিবা রুমে নেই ফ্রেশ হয়ে নিচে গেছি দেখি তসিবা রান্না করতেছে। আমি গিয়ে তসিবাকে সাহায্য করতে লাগলাম তসিবা অনেক খুশি হয়েছে।

তসিবা:- আমার জীবনের বেস্ট ঘুম হয়ছে আজকে রাতে।

আমি:- তসিবা আজকে আমরা বাড়ীতে যাবো আম্মু ফোন করেছে তাড়াতাড়ি যেতে।

তসিবা:- কিন্তু শ্বাশুমা কিছু বলবেনা তো?

আমি:- তুমি চিন্তা করোনা আমি আছি। আর আম্মা তো বলছে যেতে সকালে নাস্তা করে শ্বশুড়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরুলাম। তসিবা আমার হাতটা জড়িয়ে ধরে বসে আছে। বিকালের দিকে আমাদের বাড়ীতে গেছি। দরজায় দাঁড়িয়ে কলিং বেল বাজিয়েছি কিছুক্ষণ পরে ভাবি এসে দরজা খুলে দিয়েছে। তসিবা আমার পিছু পিছু ঢুকছে তখনি চেয়ে দেখি রিপা আর ওর আব্বা আম্মা বসে আছে। রিপা আমাকে দেখে দৌরে এসে জড়িয়ে ধরেছে।

রিপা:- সৌরভ আব্বা আম্মা আমাদের সম্পর্কটা মেনে নিয়েছে আমি অনেক খুশি। আমার পরীক্ষার পর পরিই আমাদের বিয়ে দিতে চাই।

রিপার বাবা:- সৌরভ তোমার সাথে ঐ মেয়েটা কে? তখনি আম্মু বলে,,

আম্মা:- ওর নাম তসিবা আমার বোনের মেয়ে ও বোবা কথা বলতে পারেনা এখানে কিছুদিন থাকবে তাই সৌরভ ওকে আনতে গেছে বাস স্ট্যান্ড। তখনি তসিবা কখা বলতে ছিলো আমি তসিবাকে ইশারা করে না করেছি কথা বলতে তসিবা কোনো কথা না বলে সোজা হেটে উপরের দিকে চলে গেছে------

To be continue----------
(ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করে সাথেই থাকুন। সবাই এড করে নিন। আগের পর্বগুলো আমার টাইমলাইনে দেওয়া আছে)



# নব-দম্পত্য
# পর্ব ০৬
#ক্ষুদে_লেখক
!!
সৌরভ তুমি তো চেয়েছিলে আমাদের বিয়েটা হয়ে যাক! এখন তোমার মনের আশা পুরুণ হবে খুব তাড়াতাড়ি আমাদের বিয়েটা হচ্ছে। মাত্র তো তিন মাস দেখতে দেখতে চলে যাবে বাকী দিন গুলি। কি হলো তুমি কোনো কথা বলছনা কেনো?(রিপা)

আমি:- তুমি তো সব বলতেছো আমি শুনতেছি। আচ্ছা রিপা তুমি বসো আমি একটু ফ্রেশ হয়ে আসি! আমার অনেকটা ক্লান্ত লাগছে।

রিপা:- ঠিক আছে চলো আমি তোমার সাথে যাবো আর তোমার রুমটা দেখে নিবো এই সুযোগে।(কাম সারছে রিপাকে রুমে নিয়ে গেলে তো সব ঘুমোড় ফাশ হয়ে যাবে যেই করে হক রিপাকে রুমে যাওয়া থেকে আটকাতে হবে)

আমি:- তুমি রুমে গিয়ে করবে? তুমি বরং আম্মুর সাথে বসে গল্প করো আমি এখুনি ফ্রেশ হয়ে চলে আসবো।

রিপা:- নাহ আমি তোমার রুমে যাবো চলোনা চলো প্লিজ।

আমি:- বলছি তো রুমে যেতে হবেনা (দমক দিয়ে কথাটা বলছি রিপা আমার হাতটা ছেড়ে দিয়েছে! কিছুটা ভয় পাইছে মনে হচ্ছে।)

আম্মু:- সৌরভ কি হয়ছে রিপাকে এত জুড়ে দমক দিলি কেনো?

আমি:- সরি রিপা আসলে রুমটা গুচানো না তাই বলছি কি আজ নয় আরেকদিন তুমি আসলে নিয়ে যাবো।

রিপা:- অগুচালো থাকলে তো ভালো আমি গুচিয়ে দিবো! চলো সৌরভ আমার অনেক দিনের ইচ্ছে তোমার রুমটা দেখবো। বলে রিপা আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতেছে উপরে। (আমি মনে মনে আল্লাহকে ডাকছি ঠিক তখনি আব্বু এসেছে বাড়ীতে আর আমাকে বলে,,,)

আব্বু:- সৌরভ তুই আজকে চলে এসেছিস তোর তো আগামীকাল আসার কথা ছিলো? ঐ তুই আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দে বলছি?

আমি:- রিপা হাতটা ছাড়ো আব্বু দেখছে ওনি অনেক রাগি মানুষ। তখনি রিপা আমার হাতটা ছেড়ে দিয়েছে। আব্বা তসিবা তো চলে আসছে তাই আমি থাকিনাই আমিও চলে এসেছি।

আব্বা:- ঐ তোর সাথে এই মেয়েটা কেরে তসিবা কোথায়?

আমি:- তসিবা তো রুমে গেছে ওর নাম রিপা। তখনি রিপা গিয়ে আব্বাকে পা ছুয়ে সালাম করছে।

আব্বা:- আরে তুমি কে আর আমাকে কেনো সালাম করছো?

রিপা:- আমি সৌরভের হুব স্ত্রী তবে আমরা দুজন দুজনকে অনেক ভালোবাসি। আমাকে দুআ করেন যাতে করে আমি আপনার ছেলের সাথে সুন্দর ভাবে সংসার করতে পারি।

আব্বা:- তোমাকে এই বাড়ীতে ঢুকতে কে দিয়েছে? (তখনি রিপার বাবা মা আর রিপা কিছুটা থমকে গেছে। আর ঠিক তখনি আম্মা বলে,,,)

আম্মা:- কি হয়ছে এত কথা বলছো কেনো? রিপাকে আমি বউ হিসাবে মেনে নিতেছি রিপার পরীক্ষার পর সৌরভের সাথে বিয়ে দিবো। তুমি অফিস থেকে এসেছো এখন ক্লান্ত আছো রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও।

রিপার বাবা:- আচ্ছা বিয়ান সাহেবা আমরা তাহলে আজকের মত যাই সামনে সাপ্তাহ শুক্রবারে রিপার আর সৌরভের Engagement এর রিং বদল করা হবে কেমন!

আম্মা:- যা ভালো মনে করেন এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। মা রিপা তোমার যখন ইচ্ছে হবে তখন সৌরভের কাছে চলে আসবে কেমন।

রিপা:- ঠিক আছে আম্মাজান বলে আম্মাকে রিপা সালাম করে দিয়েছে। আম্মা রিপাকে বুকে জড়িয়ে ধরেছে আর কপালে চুমু দিয়ে আদর করে দিয়েছে। সৌরভ তাহলে আজকে যাই আগামীকাল আবার আসবো কেমন?

আমি:- বাড়ীতে আসতে হবেনা তুমি ফোন করো আমি নিজেই তোমার কাছে চলে আসবো। রিপা অনেক খুশি হয়েছে ওরা বেরিয়ে গেছে আমি রুমে এসেছি দেখি তসিবা কান্না করতেছে। আমি গিয়ে ওর পাশে বসেছি ওর দিকে হাতটা বাড়িয়েও আর বাড়াইনি।

তসিবা:- আজকাল আমাকে স্পর্শ করতেও কি মানা করছে নাকী আপনার গ্রালফ্রেন্ড রিপা।

আমি:- ঠিক তানা আমি বুঝতে পারছি তোমার মনে এখন কি ভয়ে যাচ্ছে কিন্তু কি করবো বলো রিপাকে তো আমি তোমার আগে থেকে ভালোবাসি।

তসিবা:- থাক আর কোনো ওজুহাত দেখাতে হবেনা! বুঝেছি আমার জীবনটা আমাকে সাজাতে হবে কারো উপর নির্বর করাটা আমার বোকামি হচ্ছে। সমস্যা নেই যদি আমার সৎ মা আমাকে মেয়ে হিসাবে নাও মানে তাও আপনার কাছে থাকবোনা। আপনি চিন্তা করবেন না আমি চলে যাবো আপনাদের বিয়ের আগেই।

আমি:- তোমার যা ভালো মনে হয় করো। কিন্তু কোথায় যাবে শুনি?

তসিবা:- পৃথিবীটা অনেক বড় কোথাও না কোথাও আমার মত একটা অসহায় মেয়ের যায়গা হয়ে যাবে। আর যদি কোথায় যায়গা নাও হয় তাও আপনাদের মাঝে কাবাব মে হাড্ডি হতে আসবোনা। আমাকে নিয়ে চিন্তা করতে হবেনা আমি তো বোবা আর বোবারা কোনো কিছু বলতে পারেনা।

আমি:- আচ্ছা আমি তো কথা দিয়েছি তোমার মা তোমাকে মেয়ে হিসাবে মেনে নিবে! এখন কান্না থামাও আর তোমার চোখের পানি আমার সহ্য হয়না।

তসিবা:- থাক আর মিথ্যা মায়া দেখাতে হবেনা! এমনিতেই আমার জন্য অনেক করেছেন আর কিছু করতে হবেনা। তসিবা কথাটা বলে রুম থেকে বেড়িয়ে গেছে। আমি কাপড় চেইন্জ করে রুমে থেকে বের হয়ে নিছে গেছি। সবাই বসে গল্প করতেছে আর তসিবা টিভি দেখছে।

আমি:- আম্মা আমার রাতে ফিরতে একটু দেরি হবে। কিছু জুরুরী কাজ আছে শেষ করে ফিরবো।

আম্মা:- ঠিক আছে! (তখনি তসিবা উঠে দাঁড়িয়ে আমার দিকে চেয়ে আছে। মনে হচ্ছে কিছু বলবে কিন্তু সবাই তো জানে তসিবা কথা বলতে পারেনা তাই এখন কথাও বলতেছেনা)

আমি:- তসিবা তুমি কি বলবে? তখনি তসিবা মাথা নাড়িয়ে না সূচক বলছে আমি রাগ করে চলে এসেছি। আমি বাহিরে এসে বাইকটা নিয়ে বেরুলাম আজ মনটা খুব খারাপ লাগছে। অফিসে ঢুকেছি সবাই আমাকে দেখে অভাক আমি সবাই সাথে হাই হ্যালো করে নিজের ডেক্সটপে বসেছি। কাজ করতেছি আর মোবাইলটা বার বার দেখতেছি নাহ তসিবা তো ফোন করছেনা তখনি মনে হলো আরে আম্মা তো তসিবার মোবাইলটা ভেঙে ফেলছে। কাজ গুলি শেষ করেছি রাত দশটা বাজে। অফিস থেকে বেরিয়ে সোজা শোরুমে গিয়ে তসিবার জন্য একটা মোবাইল কিনে নিয়েছি। তসিবাকে একটা সারপ্রাইজ দিবো রাত এগারোটার দিকে বাড়ীতে গেছি কলিং বেল বাজাতেই তসিবা এসে দরজাটা খুলে দিয়েছে। আমি মোবাইলটা বের করতে যাবো তখনি আম্মা বলে,,,

আম্মা:- সৌরভ এসেছিস নাকী রে?

আমি:- হ্যা আম্মা এসেছি ভিতরে ঢুকেছি দেখি আম্মা সুফায় বসে আছে।

আম্মা:- তসিবা তুমি রুমে যাও আমি সৌরভকে খাবারটা বেরে দিতেছি! আর শুনো আগামীকাল সকাল থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়বে। আর ফজরের সময় আমাকে নামাযের জন্য দরজায় নক করবে কেমন? (তসিবা মাথাটা নাড়িয়ে হ্যা বলেছে তসিবা মনটা খারাপ করে চলে গেছে)

আমি:- তসিবা তুমি খাবার খেয়েছো? (তখনি আম্মা বলে)

আম্মা:- সেই কখন খেয়েছে। এখন কার মেয়েরা স্বামীর জন্য অপেক্ষা করবে? ওরা তো চিন্তা করে নিজেরটাই। (তসিবার দিকে চেয়ে দেখি তসিবার মুখ সুকিয়ে আছে)

আমি:- তসিবা তুমি খাবারটা বেরে দাও আম্মা আপনি গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। দিন দিন আপনার শরীর একদম খারাপ হয়ে যাচ্ছে। (আম্মার কানের কাছে গিয়ে বলি! তসিবাকে একটু কষ্ট দিতে দেন এত আরাম করতে কেনো বলছেন তাহলে তো এই বাড়ী থেকে যেতে চাইবেনা?)

আম্মা:- হ্যা কথাটা তো মন্দ বলিসনি। তসিবা তুমি সৌরভকে খাবার বেরে দাও আর খাবার শেষ হলে সব কিছু গুচিয়ে পরিস্কার করে রেখে দিবে। (তসিবা মাথাটা নাড়িয়েছে আম্মা একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেছে। যখনি দেখছি আম্মা চলে গেছে তখনি আমি বলি।

আমি:- তসিবা বসো খাবার খাবে। (তসিবা ইশারা করছে খাবেনা) এখানে এখন কেও নেই মুখে বলতে পারো। তুমি খেতে বসবে নাকী আমি উঠে যাবো? যখনি আমি খাবার টেবিল থেকে উঠে যেতে ছিলাম তখনি তসিবা বলে,,,)

তসিবা:- বসেন প্লিজ আমি খেতে বসতেছি।

আমি:- হ্যা বসো! তসিবা বসেছে আমি দেখি তসিবা ওর বা হাতটা লুকিয়ে রাখছে পানি খাওয়ার জন্য ডান হাতটা ব্যাবহার করছে। তসিবা তোমার বায়ে হাতে কি হয়ছে?

তসিবা:- কিছুনা!

আমি:- দেখি কিন্তু তসিবা দেখাচ্ছেনা আমি জোর করে দেখছি চেয়ে দেখি হাতের আঙুল কাটা। কেমনে হয়ছে?

তসিবা:- ঐ তেমন কিছুনা তরকারী কুটা কাটি করতে গিয়ে। বাড়ীর কাজের মেয়ের এইটা তো কমন ব্যাপার তাইনা।

আমি:- দাও আমি তোমাকে খায়িয়ে দিতেছি! তসিবা বাধা দিয়েছে কিন্তু আমি জোর করে ওকে খায়িয়ে দিয়েছি। দুজনের খাবার শেষ হয়ছে! তসিবা তুমি বসো আমি সব পরিস্কার করতেছি এক এক করে সব পরিস্কার করেছি তসিবা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। সব পরিস্কার করে দিয়েছি তসিবা চলো এবার রুমে যাই অনেক ঘুম পাচ্ছে।

তসিবা:- আপনি আম্মাকে কেনো পাঠিয়ে দিয়েছেন আমি বুঝতে পারছি।

আমি:- কি বুঝতে পারছো?

তসিবা:- ঐ আমি খায়নি তাই আমাকে খায়িয়ে দিবেন বলে। আচ্ছা আপনি বুঝলেন কি করে আমি যে খাবার খায়নি?

আমি:- তোমার মুখের দিকে তাকালে বলে দিতে পারি! আচ্ছা এখন রুমে চলো?

তসিবা:- আমাকে কুলে তুলে রুমে নিয়ে যাবেন আমার না অনেক ইচ্ছা ছিলো আমার বর রোজ আমাকে কুলে উঠাবে!

আমি:- এখন এত গুলা কাজ করেছি আবার তোমাকে কুলে নিবো?

তসিবা:- প্লিজ!

আমি:- ঠিক আছে আসো! তসিবা ওনেক খুশি হয়েছে আমি তসিবাকে কুলে নিতেই তসিবা আমার গালে চুমু দিয়েছে। তসিবা সত্যি তুমি অনেক ভালো আর তোমার মত বউ যে ছেলে পাবে সে অনেক ভাগ্যবান হবে।

তসিবা:- তাহলে আমাকে সারা জীবন আপনার কাছে রেখে দেন! আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসবো অনেক সূখে রাখবো।

আমি:- কিন্তু তুি রিপার মত আমাকে সূখ দিতে পারবেনা! রুমে এসেছি তুমি নামো তসিবাকে নামিয়ে দিয়েছে আমি গিয়ে মলম আর তসিবার ঔষধ নিয়ে এসেছি। তসিবা মন খারাপ করে বসে আছে আমি ওর পাশে বসেছি।

তসিবা:- দেন এই গুলি আমি নিজেই করতে পারবো।

আমি:- কথা কম বলে হাতটা দাও বেন্ডিজ করে দিবো। হাতের আঙুলটা ডেটল দিয়ে ভালো বাবে দুইয়ে বেন্ডিজ করে দিয়েছি। নাও এবার ঘুরে বসো আর নাও ঔষধ গুলি খাও আমি মলম লাগিয়ে দিতেছি। বাহ তসিবা তোমার পিটের দাগ গুলি অনেকটা কম দেখা যাচ্ছে ডক্টরটা অনেক ভালো তাইনা?

তসিবা:- ডক্টরের বাহানা করে লাভ নেই পিট দেখা শেষ হয়ছে নাকী আরো দেখবেন সেইটা বলেন?

আমি:- তোমার পিট দেখবো কেনো আমি তো মলম লাগিয়ে দিতেছি। নাও মলম লাগানো শেষ আমি ঘুমায় বলে শুয়েছি তখনি তসিবা আমার বুকের উপর শুয়েছে। আজকে কিছুই বলিনি তসিবা নিজেই বক বক করছে আর আমি কখন ঘুমিয়ে গেছি ঠিক মনে নেই। ফজরের আজান শুনে ঘুম ভাঙছে তসিবাকে ডেকে তুলে দিয়েছি।

তসিবা:- উম্মা উম্মা আমাকে একটু আদর করে দেননা।

আমি:- বেশি আদর করলে নামায পড়তে পারবোনা আর সকালে তো আম্মুর বকা শুনতে হবে তখনি তসিবা লাফ মেরে উঠে বসে গেছে। আমি ফ্রেশ হয়ে মসজিদে নামায পড়তে চলে গেছি। নামায পড়ে কিছুটা ঠন্ডা হাওয়া লাগিয়ে নিলাম গায়ের মধ্যে আমি ভাইয়া আব্বু সবাই নামায পড়েছি। বাড়ীতে এসে দেখি ভাবি আর তসিবা নাস্তা তৈরি করছে আমরা যার যার রুমে চলে গেছি। আমি রুমে এসে ডেসিন টেবিলের উপরে তসিবার জন্য আনা মোবাইলটা রেখেছি। রুমে বসে আছি তখনি রিপা ফোন করেছে রিসিব করতেই বলে।

রিপা:- হাই জানু কেমন আছো?

আমি:- ভালো! তুমি কেমন আছে?

রিপা:- ভালো! আজকে বিকালে দেখা করতে পারবে?

আমি:- কখন?

রিপা:- বিকাল পাঁচটার দিকে?

আমি:- ঠিক আছে! ফোনটা রেখে দিয়েছে আমি পেছনে ঘুরে দেখি তসিবা এসেছে রুমে।

তসিবা:- নাস্তা করতে আম্মা ডাকছে?

আমি:- হ্যা আসছি আর তোমার ডেসিন টেবিলের এই অবস্থা কেনো পরিস্কার করে রাখতে পারোনা?

তসিবা:- কেনো ডেসিন টেবিলের উপরে তো কোনো কিছুই নেই তখনি চেয়ে দেখে একটা মোবাইলের বাক্স। মোবাইলের বাক্সটা কে রাখছে?

আমি:- কি করে বলবো কে রাখছে? এসব রাখার জন্য ময়লার ঝুড়ি আছে ঐখানে ফেলবে। আমি নিচে গেলাম তসিবা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তসিবা আমি বেরুলাম বলে বেরিয়ে এসেছি। সবাই নাস্তার টেবিলে বসে নাস্তা করছে আমি বসেছি।

আব্বা:- সৌরভ তসিবা কোথায়?

আমি:- রুমে আছে!

ভাইয়া:- ঐ তো তসিবা আসতেছে।

আব্বা:- তসিবা এসো নাস্তা করে নিবে। তখনি তসিবা এসে আমার পাশে বসেছে। তসিবা আমাকে একটা কাগজ দিয়ে ইশারা করছে আব্বার হাতে দিতাম।

আমি:- কাগজটা আব্বাকে দিতাম? তসিবা মাথা নাড়িয়ে বলছে হ্যা। (আমি কাগজের লিখাটা পড়ে তো মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে মোবাইল দিয়েছি আমি আর ধন্যবাদ দেয় আব্বাকে?) আমি তসিবার দিকে তাকিয়ে আছি তসিবা মুচকি মুচকি হাসতেছে।

আব্বা:- মা তসিবা ধন্যবাদ কেনো? (তখনি তসিবা মোবাইলটা বের করে আব্বাকে দেখিয়ে লিখে দিয়েছে)

তসিবা:- আমাকে এত সুন্দর একটা মোবাইল গিফট করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আব্বা:- ও তাই বলো! আমি রাগ করে উঠে গেছি দূর কোথায় আমি মোবাইল গিফট করেছি আর আব্বাকে ধন্যবাদ দিতেছে।

আম্মা:- তুমি আমার জন্য কোনো কিছু কিনতে গেলে তোমার টাকা থাকেনা আর বউমার জন্য এত দামী মোবাইল কিনে এনেছো?

আমি:- আম্মা সব সময় ঝগড়া করা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই। নাস্তা করতে দিবেনা শান্তিতে আমি বের হচ্ছি।

আম্মা:- নাস্তা করে যা!

আমি:- খিদা নেই বলে চলে আসতেছি তখনি তসিবা আমার হাত ধরে বসিয়ে দিয়েছে আমি বসেছি। সবার নাস্তা শেষ হয়ছে তখনি কলিং বেলের আওয়াজ করেছে। ভাবি গিয়ে দরজা খুলে দিয়েছে তখনি চেয়ে দেখি রিপা এসেছে। আমরা সবাই দাঁড়িয়ে আছি তখনি রিপা আমার দিকে এগিয়ে আসতেছে। যখনি রিপা আমাকে জড়িয়ে ধরবে ঠিক তখনি তসিবা এমন এক কান্ড করেছে তা দেখে আমরা সবাই অভাক হয়ে তাকিয়ে আছি তসিবার দিকে-------

To be continue---------
(সবাই এড করে নিন। ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করে সাথেই থাকুন 💝)



# নব-দম্পতি
# পর্ব ০৭
#ক্ষুদে_লেখক
!!
তসিবার এমন কান্ড দেখে আমরা সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। রিপা যখন আমার দিকে এগিয়ে আসতে ছিলো তখনি তসিবা গিয়ে রিপাকে জড়িয়ে ধরেছে।(আমি ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম না তসিবা কেনো রিপাকে জড়িয়ে ধরছে তখনি রিপা বলে) আরে আমাকে কেনো জড়িয়ে ধরছেন ছাড়ুন বলছি। রিপা তো তসিবার উপর রেগে গেছে কিন্তু নাছুর বান্দা তসিবা রিপাকে জড়িয়ে ধরে রাখছে।

আম্মা:- তসিবা কি হচ্ছে এমন করছো কেনো? রিপাকে জড়িয়ে ধরেছো কেনো ওকে ছাড়ু বলছি। (তখনি তসিবা রিপাকে ছেড়ে দিয়েছে কিন্তু রিপার দিকে তাকিয়ে আমি নিজেই শক খেয়ে গেলাম। রিপার দামী সাদা ড্রেসটা একদম কালিতে বুকের সাইট কালো হয়ে গেছে। রিপা এখনো খেয়াল করেনি আমি তসিবার দিকে তাকিয়ে দেখি তসিবা মুচকি মুচকি হাসছে। বাহা তসিবার হাসিটা অনেক ধারুন তো! এই জন্য তসিবা গিয়ে রিপাকে জড়িয়ে ধরেছে)

আমি:- তসিবা তুমি উপরে যাও এখুনি। (তসিবা আমার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে তখনি ভাবি বলে)

ভাবি:- রিপা তোমার বুকের অংশটা কি কালো নাকী কোনো ময়লা লাগছে? (তখনি রিপা দেখছে আর দেখা মাত্রই তসিবার উপর খেপে গেছে।)

রিপা:- এই তোমাকে কে বলছে আমাকে জড়িয়ে ধরতে? দেখছেন আন্টি আমার এত দামী ড্রেসটা নষ্ট করে দিয়েছে।

আম্মা:- তসিবা তুমি ওকে জড়িয়ে ধরতে গেলে কেনো? কে বলছে রিপাকে কালি মাখা শরীর নিয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরতে? (তসিবা ভয়ে একদম চুপসে গেছে তখনি আম্মে তসিবাকে ধমক দিয়ে বলছে) কি হলো বলো কে বলছে রিপাকে জড়িয়ে ধরতে? তখনি তসিবা আমার দিতে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।

রিপা:- সৌরভ তুমি বলছো আমাকে কালী মেখে দিতে?

আমি:- তসিবা তোমাকে আমি কখন বলছি?

রিপা:- বোবা মেয়ে কি করে বলবে আর তুমি বলছো বলে তসিবা এমন কাজ করেছে। আন্টি আমি গেলাম আর সৌরভ তুমি বিকালে দেখা করো আজকে তেমার খবর আছে বলে দিলাম। (রিপা রাগ করে বেড়িয়ে গেছে আমি তসিবার দিকে তাকিয়ে দেখি তসিবা অনেক খুশি হয়েছে। আমি রিপার পিছু পিছু গেছি)

আমি:- রিপা প্লিজ তুমি আমার কথাটা তো শুনবে?

রিপা:- তোমার সাথে আমার কোনো কথা নেই আমার মনের অবস্থা এখন ভালোনা প্লিজ তুমি যাও। আমাকে একা থাকতে দাও প্লিজ। রিপা চলে গেছে আমি মন খারাপ করে বাইক বেড় করেছি।

আমি:- তসিবার প্রতি রাগটা একটু বেশি হচ্ছে এই মেয়েটাকে কিছু বলিনা বলে একদম মাথায় উঠে বসেছে। ইচ্ছে করছে বাড়ীতে গিয়ে মন মত বকা দিয়ে আসি কিন্তু কেনো জানি যাইতে ইচ্ছে হচ্ছেনা। মন খারাপ করে অফিসে এসেছি কাজ করেছি নিজের মত করে। বিকালে অফিস থেকে বেড়িয়ে রিপার সাথে দেখা করতে গেলাম। রিপা ও তার সাথে দুইটা বান্ধবী ছিলো। কাছে গিয়ে সরি বলে দিয়েছি আর একটু প্রশংসা করেছি বাছ সব ভুলে গেছে।

রিপা:- সৌরভ তুমিও না আমি তো সেই কখন সব ভুলে গেছি। আসো আজকে আমি কিছু শপিং করবো।

আমি:- ঠিক আছে চলো! রিপাকে নিয়ে শপিংয়ে গেলাম। মনে হচ্ছে জীবনে কোনো কেনা কাটা করেনি যা দেখছে তাই নিচ্ছে এদিকে আমার টাকার বারোটা বাজতেছে। কফি কালারের একটা চুড়িদার অনেক ভালো লাগছে। আমি রিপাকে না জানিয়ে তসিবার জন্য কিনে আলাদা করে প্যাক করে নিয়েছি।

রিপা:- আমার হয়ে গেছে এবার চলো?

আমি:- ভাবি কিছু জিনিস নিতে বলছে আমি ঐ গুলি প্যাক করে নিয়ে আসি তুমি বাইকের কাছে যাও।

রিপা:- কি জিনিস?

আমি:- মেয়েলি।

রিপা:- চলো আমি যাবো তাহলে তোমার জন্য ভালো হবে।

আমি:- না না ভাবি দোকানদারকে ফোন করে বলে দিয়েছে আমি গেলে দিয়ে দিবে।

রিপা:- তাহলে ঠিক আছে।

আমি:- হ্যা! রিপাকে রেখে আমি গিয়ে প্যাকেটা নিয়ে এসেছি। বাইকে করে দুজনে যেতেছি রিপা আমাকে জড়িয়ে ধরে রাখছে কিন্তু মনে হচ্ছে তসিবা আমার পেছনে। আমি কি তসিবাকে একটু বেশি ভালোবেসে ফেলছি মনের মধ্যে বার বার প্রশ্নটা তৈরি হচ্ছে।

রিপা:- কি হলো চুপ করে আছো কেনো কিছু তো বলো?

আমি:- তোমার বাড়ীর সামনে এসেছি তুমি নামো।

রিপা:- আগে আদর করে দাও।

আমি:- বিয়ের পরে হবে এখন তুমি যাও এমনিতেই রাত হয়েছে অনেক।

রিপা:- দুই দিন পরে তো আমাদের। (রিপাকে পুরা কথা বলতে দেয়নি আমি চলে এসেছি। রিপা বির বির করছে কিন্তু আমার ভালো লাগছেনা। ঘন্টা খানেক বাদে বাড়ীতে এসেছি। কলিং বেল বাজাতেই ভাবি এসে দরজা খুলেছে।

আমি:- ভাবি তুমি তসিবা কোথায়?

ভাবি:- বলতে পারবোনা! আচ্ছা সৌরভ তুমি তো বিয়ের আগে যা বলছো এখন কাজ করছো সব ওল্টা পাল্টা। তুমি তসিবাকে ভালো টালো বাসোনি তো আবার?

আমি:- তোমার সাথে পরে কথা বলবো বলে আমি উপরে চলে এসেছি। রুমে এসে দেখি রুমটা ফাকা তসিবা নেই বাথরুমের দরজাটা খুলা। তসিবাটা গেলো কোথায় এদিক সেদিক খুঁজে কোথাও না পেয়ে আমার ভিতরে কেমন জানি একটা করছে।
ওর মোবাইলে বার বার ফোন করতেছি কিন্তু বন্ধ বলছে। খুব টেনশন হচ্ছে কি করবো চিন্তা করে পাচ্ছিনা তখনি আব্বা বলে,,

আব্বা:- সৌরভ এমন করছিস কেনো?

আমি:- তসিবা কোথায়?

আব্বা:- তসিবা তো ছাদে গেছে দেখছি।

আমি:- ঠিক আছে বলে দৌরে ছাদে গেছি। গিয়ে দেখি তসিবা ব্যাঞ্চের উপরে বসে আঁকাশে চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে। তসিবা তোমার মোবাইল কি হয়ছে আর তুমি ছাদের উপর এসেছো কেনো? কি হলো কথা বলছোনা কেনো? বলে তসিবাকে আমার দিকে ঘুরিয়েছি দেখি তসিবা কান্না করছে। কান্না করছো কেনো বলো কি হয়ছে তোমার?

তসিবা:- আম্মার কথা খুব মনে পড়ছে! আজকের দিনে আম্মা আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। আজকে আম্মাকে খুব মনে পড়ছে।

আমি:- তার জন্য তুমি একা ছাদের উপরে চলে আসবে? আর মোবাইলটা বন্ধ করে রাখছো কেনো?

তসিবা:- আমি বন্ধ করিনি আপনার মা আমার কাছ থেকে মোবাইলটা নিয়ে গেছে।

আমি:- কেনো?

তসিবা:- ওনার মোবাইলটা আছার মেরে ভেঙেছে প্রথমে এরপর আমাকে বলে আমার মোবাইলটা তো ভেঙে গেছে এখন মার্কেটে যেতে পারবোনা। তোমার তো মোবাইলে কেও ফোন করেনা তোমার মোবাইলটা আমাকে দিয়ে দাও।

আমি:- এমনি তুমি দিয়ে দিলে?

তসিবা:- আমি দিতে চাইনি কিন্তু তখনি ওনি জোর করে নিয়ে গেছে আর আমাকে একটা থাপ্পড় দিয়েছে। দেখেন আমার বা গালটা একদম লাল হয়ে আছে।

আমি:- কি আম্মা এই কাজ করেছে। এসো তুমি আমার সাথে আম্মাকে জিজ্ঞেস করবো কেনো ওনি এমন কাজ করেছে।

তসিবা:- প্লিজ আর কোনো ঝগড়া তৈরি করতে যাবেন না এমনিতেই সবাই আমাকে তাড়ানোর জন্য উঠে পরে লেগেছে। তখন আমাকে মেরে ফেলতে চাইবে।

আমি:- তসিবা তুমি এসব কি বলছো?

তসিবা:- আমি ঠিকই বলছি! আচ্ছা আমার প্রতি এত মিথ্যা মায়া দেখাতে হবেনা। আপনি যান আমি একটু একা থাকতে চাই প্লিজ।

আমি:- নাহ তুমি এখুনি আমার সাথে যাবে! তোমার জন্য একটা গিফট আনছি চলো তুমি দেখবে।

তসিবা:- আমার লাগবেনা আপনি রিপাকে বেশি করে দেন। আচ্ছা শেষবারের মত একটা কথা বলবো রাখবেন?

আমি:- এমন ভাবে বলছো কেনো বলো তুমি বলতে চাও। (তখনি তসিবা আমাকে জড়িয়ে ধরেছে)

তসিবা:- আমাকে একটু জড়িয়ে ধরে রাখেন প্লিজ। আমি আপনাকে জড়িয়ে ধরে কথা গুলি বলতে চাই।

আমি:- ঠিক আছে! তসিবাকে জড়িয়ে ধরেছি ওর কপালে চুমু দিয়েছি।

তসিবা:- আমি আপনাকে ছাড়া থাকতে পারবোনা আমাকে আপনি বউ হিসাবে মেনে নেন। আমি আপনাকে অনেক সূখে রাখবো খুব খুব ভালোবাসবো। রিপার তো বাবা মা সবাই আছে আমার তো বাবা থাকতে বাবা নেই আপনি আমাকে মেনে নিন প্লিজ। রিপা দেখতে সুন্দর ওকে যে কোনো ছেলে বিয়ে করবে। আর তাছাড়া রিপার তো কোনো বিয়ে হয়নি রিপাকে বিয়ে করতে চাইবে। কিন্তু আমার তো মা নেই বাবা থেকেও নেই আবার একটা বিয়ে হয়ছে আর যদি আমার সৎ মায়ের কথা শুনে তাহলে তো কেও আমাকে বিয়ে করতে চাইবেনা। (তসিবা কথা গুলি আমার চোখে পানি চলে এসেছে)

আমি:- তাহলে এখন কি করতে হবে?

তসিবা:- কিছুনা শুধু আমাকে বউ হিসাবে মেনে নিলে হবে!

আমি:- কিন্তু তুমি তো আমাকে ডির্ভোস দিতে রাজি হয়ছো আর এপ্লিকেশনে সাইন করেছো? (তখনি দেখি তসিবা চুপ হয়ে গেছে) কি হলো কথা বলছোনা কেনো তখনি চেয়ে দেখি তসিবা কোনো সারা শব্দ করছেনা কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে গেছে। আমি তসিবাকে কুলে তুলে নিয়েছি। তসিবাকে কুলে করে রুমে নিয়ে এসেছি ওকে খাটের উপর শুইয়ে দিয়েছি। তসিবার কপালে চুমু দিয়ে আমি ওর পাশে শুয়ে পড়েছি। সকালে ঘুম থেকে উঠে নামায পড়তে গেছি যাবার আগে তসিবাকে উঠিয়ে দিয়েছি। আজকের দিনটা ভালোই যাবে।

আব্বা:- সৌরভ তসিবাকে মেনে নে তসিবা খুব ভালো মেয়ে। এতিম মেয়ে কষ্ট দেওয়াটা ঠিক হবেনা।

আমি:- কিন্তু আজকে তো রিপার সাথে আম্মা Engagement ফিক্স করেছে। আর রিপা আমাকে একটু বেশি ভালোবাসে।

আব্বা:- আমি যা বলছি তুই একটু ভেবে দেখিস। আব্বা চলে গেছে আমি রুমে এসেছি তসিবাকে আজকে একটু বেশি খুশি খুশি লাগছে।

তসিবা:- আজ তো আপনাদের আংটি বদল হবে।

আমি:- হ্যা হবে।

তসিবা:- আজকে নিজ হাতে আমি আপনাকে সাজিয়ে দিবো কেমন।

আমি:- দরকার নেই আমি নিজেই সাজবো। তুমি তোমার কাজ করো আর শুনো এখানে তোমার জন্য একটা চুড়িদার রাখা আছে ঐটা পড়বে।

তসিবা:- কাজের মেয়েকে এত দামী পোষাকে সুন্দর মানাবে না। আমাকে নিয়ে চিন্তা না করে রিপাকে নিয়ে ভাবেন। আমার কাজ আছে আমি গেলাম। আমি তাকিয়ে আছি তসিবা চলে গেছে।

আজ সারাদিন বাড়ীতে কিন্তু তসিবাকে দুইটা মিনিটের জন্য কাছে পায়নি মেয়েটা গেছে কোথায়? বিকাল ঘরিয়ে সন্ধা হয়ে গেছে বাড়ীতে সব মানুষ আসতে আরম্ভ করেছে। রিপা তার বাবা, মা আর বড় বোন, বোন জামাই এসেছে।

রিপা:- সৌরভ এসো তোমাকে সবার সাথে আলাপ করিয়ে দেয়।

আমি:- হ্যা চলো! রিপা আমার হাত ধরে টেনে নিতেছে তখনি খেয়াল করেছি তসিবা একটা ছেলের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে। তা দেখে আমার মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে। রিপা নিয়ে এক এক করে ওর সব আত্বীয় স্বজনদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতেছে।

রিপা:- সৌরভ তুমি ঠিক আছো?

আমি:- হ্যা ঠিক আছি! আমি বার বার তসিবার দিকে তাকাচ্ছি রিপা ব্যাপারটা খেয়াল করছে।

রিপা:- সৌরভ তুমি ঐ দিকে কি দেখছো?

আমি:- কিছুনা তুমি থাকো আমি আসতেছি। রিপা কে বলে আমি তসিবার দিকে এগিয়ে যেতেছি তখনি চেয়ে দেখি ছেলেটা তসিবার দিকে হ্যান্ডসীপ করার জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তসিবা হাত বাড়াবে বাড়াবে এমন সময় আমি গিয়ে তসিবার হাত ধরেছি।

তসিবা:- কি হয়ছে হাত ধরেছেন কেনো ছাড়েন!

ছেলে:- আরে আপনি ওর হাত ধরেছেন কেনো ছাড়ুন ওর হাত।

আমি:- সেই কয়ফত আপনাকে দিবো কেনো? তসিবা তুমি আসো বলে তসিবার হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছি আর সবাই আমাদের দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি তসিবাকে নিয়ে সোজা সিঁড়ি দিয়ে সোজা উপরে চলে যাচ্ছি তখনি------

To be continue----------
(সবাই এড করে নিন 💝 ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করে সাথেই থাকুন 💝)





# নব-দম্পতি
# পর্ব ০৮
#ক্ষুদে_লেখক
!!
তসিবার হাত ধরে টেনে উপরে নিয়ে যাচ্ছি তখনি আম্মু বলে! সৌরভ তসিবাকে নিয়ে উপরে যাচ্ছিস কেনো? কিছুক্ষনের মধ্যে তোর আর রিপার আংটি বদল হবে। আয় নিচে আয় তসিবার সাথে কথা বললে পরে বলিস।

আমি:- আম্মা আমার এখুনি কথা বলতে হবে। বলে তসিবাকে নিয়ে সোজা রুমের দিকে হাটা দিয়েছি। রিপা সহ বাড়ীর সব মেহমানরা আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। রুমে এসে দরজাটা লাগিয়ে দিয়েছি।

তসিবা:- দরজা লাগালেন কেনো?

আমি:- তুমি ঐ ছেলেটার সাথে হেসে হেসে কি কথা বলছো শুনি?

তসিবা:- ও এই কথা জানার জন্য আমাকে টেনে রুমে নিয়ে এসেছেন?

আমি:- কথা না ঘুরিয়ে সোজা উত্তর দাও কেনো ঐ ছেলেটার সাথে হেসে কথা বলছো?

তসিবা:- তা আপনাকে বলতে যাবো কেনো?

আমি:- মানে?

তসিবা:- ছেলেটা মনে হয় আমাকে ভালোবেসে ফেলছে! আর তাছাড়া কিছু দিন পরে তো আপনি আমাকে বিদায় করে দিবেন তখন তো আমার থাকার একটা যায়গা লাগবে নাকী?

আমি:- তোমার কথা বুঝতেছিনা যা বলবে সোজা সুজি বলো?

তসিবা:- আমি তো বাংলা বলতেছি এখানে না বুঝার কি আছে?

আমি:- বুঝতে পারছি ঠিক আছে সমস্যা নেই তোমার যা ইচ্ছা করো তাতে আমার কিছু হবেনা। আর সরি তোমাকে এমন ভাবে ধরে আনার জন্য।

তসিবা:- সরি বলতে হবেনা আমি তো ছেলেটার মোবাইল নাম্বার রেখে দিয়েছি। আমাকে একটা মোবাইল কিনে দিবেন?

আমি:- তোমাকে দিবো মোবাইল কিনে আমার মাথা খারাপ নাকী। তখনি ভাবি দরজা নক করছে।

ভাবি:- সৌরভ তোমাকে আম্মাজান নিচে যেতে ডাকছে। সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।

আমি:- হ্যা ভাবি আসছি! আমি চলে আসবো তখনি তসিবা আমাকে বলে।

তসিবা:- আমাকে আজকে অনেক সুন্দর লাগছে আর কফি কালার চুড়িদারে নাকী অনেক ধারুন মানিয়েছে।

আমি:- কে বলছে তোমাকে একদম বিশ্রি দেখাচ্ছে।

তসিবা:- কিন্তু সাহেদ তো বলছে আমাকে অনেক সুন্দর লাগছে। যার চোখে আমাকে সুন্দর দেখায় সে আমাকে প্রকৃত ভালোবাসে।

আমি:- সাহেদটা আবার কে?

তসিবা:- ঐ আমার সাথে যে হেসে হেসে কথা বলছে। ওর নাম সাহেদ ছেলে সারাক্ষন আমার পিছু পিছু ঘুর ঘুর করছে।

আমি:- ভালোই যাক তাহলে তো আর তোমার চিন্তা নেই! আচ্ছা তাহলে আমি রিপার সাথে আংটি বদল করে নিবো? (তসিবা একটা চওড়া হাসি দিয়ে বলে)

তসিবা:- হ্যা যান মানা কে করছে? আমাকে কেনো জিজ্ঞেস করছেন আমি না করবো কেনো এখন তো আমাকে ভালোবাসার মানুষ পেয়ে গেছি।

আমি:- ঠিক আছে! তাহলে এক সাথে তোমাদের আংটি বদল করে নিতে।

তসিবা:- আমাকে নিয়ে এত চিন্তা করতে হবেনা যান দেরি হয়ে যাচ্ছে।

আমি:- ঠিক আছে তুমি যেহেতু বলছো তাহলে কি করে মিস করি। তসিবাকে রেখে আমি নিচে চলে এসেছি।

আম্মা:- সৌরভ তসিবার সাথে কথা শেষ হয়ছে? আর কি এমন জুরুরী কথা যে এখুনি বলতে হলো।

আমি:- দরকার ছিলো তাই বলেছি! এখন বলেন কি করতে হবে আমার অনেক ক্লান্ত লাগছে।

রিপার বাবা:- বাবা সৌরভ নাও রিপাকে আংটিটা পড়িয়ে দাও।

আমি:- হ্যা দেন! আংটিটা হাতে নিয়ে তসিবার দিকে তাকিয়েছি দেখি তসিবা সাহেদর সাথে দিব্যি গল্প করছে। আর তসিবাকে বেশ হাসি খুশি লাগছে।

রিপা:- সৌরভ তুমি ঠিক আছো তো? (রিপার কথা শুনে আমি বলতে ছিলাম যে রিপা আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারবোনা ঠিক তখনি ভাবি বলে)

ভাবি:- হ্যা ঠিক আছে মনে হচ্ছে কিছুটা নার্ভাস লাগছে। সৌরভ রিপাকে আংটিটা পড়িয়ে দাও।

আমি:- হ্যা দিচ্ছি! রিপাকে অবশেষে আংটিটা পড়িয়ে দিয়েছি। রিপা আমাকে আংটি পড়িয়ে দিয়েছে। সবাই অনেক খুশি হয়েছে আমি বার বার তসিবার দিকে দেখছি। দেখতে দেখতে অনুষ্টান শেষ হয়ে গেছে। রিপা তার বাবা মা, বোন সহ সবাই চলে গেছে। আমি রুমে এসে দেখি তসিবা তার পরনের গহনা ঘাটি খুলছে। আমি ফ্রেশ হয়ে এসে শুয়ে পরেছি কিছুক্ষণ পর তসিরা মলম আর ঔষধ নিয়ে এসেছে।

তসিবা:- মলমটা পিঠে লাগিয়ে দিবেন?

আমি:- পারবোনা তোমার প্রেমিক সাহেদকে বলো এসে লাগিয়ে যেতে।

তসিবা:- আমার কাছে তো মোবাইল নেই থাকলে ফোন করলে সাহেদ চলে আসবে নিশ্চয়ই।

আমি:- নাও আমার মোবাইল দিয়ে ফোন করো!( মনে মনে বলছি একবার নাম্বারটা পাই ওর গুষ্টি উদ্দার করবো)

তসিবা:- সরি আপনার মোবাইল দিয়ে ফোন করবোনা পরে যদি আপনি ফোন করে খারাপ ব্যাবহার করেন। আচ্ছা এখন কথা না বাড়িয়ে মলমটা লাগিয়ে দেন।

আমি:- তুমি আগের চাইতে অনেকটা চালাক হয়ে গেছো। দাও লাগিয়ে দিচ্ছি তসিবা ঘুরে বসেছে আমি মলম লাগিয়ে দিয়েছি। এখন আর এতটা দাগ নেই অনেকটা মুছে গেছে।

তসিবা:- জানেন সাহেদ আমাকে খুব পছন্দ করছে আর আমার অনেক প্রশংসা করছে। আমি নাকী দেখতে খুব সুন্দর আমার চুল গুলির উপর নাকী ফিদা হয়ে গেছে।(তসিবা বক বক করছে আর আমার ভিতরে জ্বলছে কানে তুলা দিয়ে শুয়ে পড়েছি)

আমি:- বক বক শেষ হলে এসে শুয়ে পড়। (তসিবা কি বলছে আমি স্পষ্ট বুঝিনি কিন্তু মনে হচ্ছে সেই একিই কথা বলছে। কিছুক্ষণ পরে দেখি তসিবা নিছে যায়গা করছে) তসিবা কি করছো নিছে বিছানা বিছানা করছো কেনো?

তসিবা:- এখন থেকে আমরা আলাদা করে শুইবো। সাহেদ আমাকে খুব বিশ্বাস করে আর সেই বিশ্বাসের অমর্যাদা করাটা ঠিক হবেনা। আর তাছাড়া কিছু দিনের মধ্যে আমারা দুজন দুজনকে ছেড়ে চলে যাবো তখন তো আলাদা ঘুমাতে হবে তাই আগে থেকে অব্যাশ করা ভালো।

আমি:- তোমার যা ইচ্ছা হয় করো আমি ঘুমালাম। চোখ বন্ধ করে রাখছি কিন্তু ঘুম তো আর আসছেনা কিছু একটা মিস করছি সেইটা হলো তসিবাকে। দুই মাস ধরে তসিবা বুকের উপর ঘুমাত এখন তো সে নিচে গিয়ে কি সুন্দর আরামছে ঘুমাচ্ছে। দূর আর পারবোনা যাই গিয়ে নিচে ওর পাশে শুয়ে পরি। তসিবার পাশে শুয়েছি তসিবা আমার উপড়ে পা তুলে দিয়েছে। আমি সুযোগে জড়িয়ে ধরেছি এবার খুব সহজে চোখে ঘুম চলে এসেছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে আলতু করে তসিবার কপালে চুুমু দিয়ে আমি ফ্রেশ হতে গেছি। নামায পড়তে যাওয়ার আগে তসিবাকে তুলে দিয়েছে।

তসিবা:- আমি সজাগ ছিলাম আজকের মত কিছু বলিনি এরপর যদি আমার পাশে এসে শুয়ে থাকেন তাহলে এর পরিনাম ভালো হবেনা।

আমি:- দুই মাসের অব্যাশ এত তাড়াতাড়ি বদলাবো কি করে তার জন্য তো কিছুটা সময় দিতে হবে নাকী?

তসিবা:- তাহলে রিপার কাছে চলে যাবেন তাও আমার পাশে আসবেন না। বলে তসিবা চলে গেছে। এই মেয়েটাকে নিয়ে কি যে করি দূর তাড়া তাড়ি নামায পড়তে যাই। নামায পড়ে কিছুটা হাটা হাটি করে এসেছি বাড়ীতে। আজকে তসিবাকে একটু বেশি অন্য রকম সুন্দর লাগছে কিন্তু তসিবা তো আমাকে পাত্তা দিচ্ছেনা।

আমি:- আম্মা আমি অফিসে যাচ্ছি আমার কাজ আছে জুরুরী!

আম্মা:- নাস্তা করে যা।

আমি:- নাহ করবোনা আচ্ছা গেলাম। তসিবা আমি অফিসে যাচ্ছি কিন্তু তসিবার কোনো খবর নেই। একদিনে তসিবা কি করে এতটা পাল্টে গেলো চিন্তা করতে করতে অফিসের জন্য রওনা হলাম। অফিসে এসেছি এসে নিজের মত করে কাজ করছি এমনি মোবাইলটা বেজে উঠেছে হাতে নিয়ে দেখি রিপা। রিসিব করেছি হ্যা রিপা বলো?

রিপা:- অফিস শেষে আমার সাথে দেখা করবে আজকে আমরা বাহিরে ডিনার করবো কেমন।

আমি:- আচ্ছা! ফোনটা কেটে দিয়েছি এই রিপাটা আমাকে ফকির করার ধান্ধা। রিপার থেকে তসিবা আমার জন্য পার্ফেক্ট হবে। কাজ গুলি শেষ করেছি আবার রিপা ফোন করেছে রিসিব করিনি কিছুক্ষণ পরে দেখি রিপা মেসেজ করে বলছে।

রিপা:- তোমার অফিসের নিচে দাঁড়িয়ে আছি কতক্ষণ সময় লাগবে তোমার?

আমি:- এই মেয়েটা তো আমাকে ফকির করার জন্য উঠে পরে লেগেছে। যাই আজকে একদম ভর্তা দিয়ে ডিনার করাবো। কাজ গুলি শেষ করে নিচে গেছি তখনি রিপা এসেছে।

রিপা:- সৌরভ চলো আমার খুব খিদা লাগছে!

আমি:- কেনো বাড়ীতে কিছু খাওনি?

রিপা:- মানে?

আমি:- কিছুনা মজা করেছি চলো। রিপাকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে গেছি রিপার অডার শুনে আমি মনে মনে রাক্ষসী ডাইনী ডেকে শেষ করে দিয়েছি। দুজনে ডিনার করলাম বিল দেখে মাথাটা ঘুরে গেছে। বিলটা দিয়ে রিপাকে নিয়ে তাড়াতাড়ি করে ওর বাড়ীতে ওকে নামিয়ে দিয়ে সোজা বাইক নিয়ে চলে এসেছি। বাড়ীতে এসে কলিং বেল বাজিয়েছি তখনি তসিবা এসে দরজা খুলে দিয়েছে। আমি ছোট করে একটা হাসি দিয়েছি কিন্তু তসিবা আমার দিকে না তাকিয়ে চলে গেছে। তসিবা সিঁড়ি দিয়ে উপরে যেতেছে আমি ওর পিছু পিছু যাচ্ছি যখনি রুমে গেছি তখনি তসিবা বলে।

তসিবা:- একটা জিনিস দেখবেন? (আমি অনেক আগ্রহো নিয়ে বলছি)

আমি:- হ্যা দেখবো। (তখনি তসিবা একটা দামী মোবাইল এনে আমাকে দেখাচ্ছে) মোবাইল পেলে কোথায়?

তসিবা:- পায়নি সাহেদ গিফট করছে আমার প্রথম ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে গিফট পেলাম। সাহেদ আমার সাথে কথা বলতে চাই তাই গিফট করছে। তখনি মোবাইলে ফোন এসেছে।

আমি:- কে ফোন করছে?

তসিবা:- আমার জানু বাবু সোনা সাহেদ মাই লাভ আপনি বসেন আমি একটু রোমান্টিক কথা বলে আসি। জানু উম্মা উম্মা ফোনে কিস করতে করতে তসিবা আমার সামনে থেকে বেড়িয়ে গেছে। তসিবার এমন কাজ দেখে আমি রিতিমত অবাক হয়ে যাচ্ছি! এইটা কি আমার বউ তসিবা নাকী তার জমজ বোন? মনের মাঝে একটা প্রশ্ন তৈরি হয়ে গেলো-------

To be continue--------
(ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করে সাথেই থাকুন 💝# নব-দম্পতি
# পর্ব ০৮
#ক্ষুদে_লেখক
!!
তসিবার হাত ধরে টেনে উপরে নিয়ে যাচ্ছি তখনি আম্মু বলে! সৌরভ তসিবাকে নিয়ে উপরে যাচ্ছিস কেনো? কিছুক্ষনের মধ্যে তোর আর রিপার আংটি বদল হবে। আয় নিচে আয় তসিবার সাথে কথা বললে পরে বলিস।

আমি:- আম্মা আমার এখুনি কথা বলতে হবে। বলে তসিবাকে নিয়ে সোজা রুমের দিকে হাটা দিয়েছি। রিপা সহ বাড়ীর সব মেহমানরা আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। রুমে এসে দরজাটা লাগিয়ে দিয়েছি।

তসিবা:- দরজা লাগালেন কেনো?

আমি:- তুমি ঐ ছেলেটার সাথে হেসে হেসে কি কথা বলছো শুনি?

তসিবা:- ও এই কথা জানার জন্য আমাকে টেনে রুমে নিয়ে এসেছেন?

আমি:- কথা না ঘুরিয়ে সোজা উত্তর দাও কেনো ঐ ছেলেটার সাথে হেসে কথা বলছো?

তসিবা:- তা আপনাকে বলতে যাবো কেনো?

আমি:- মানে?

তসিবা:- ছেলেটা মনে হয় আমাকে ভালোবেসে ফেলছে! আর তাছাড়া কিছু দিন পরে তো আপনি আমাকে বিদায় করে দিবেন তখন তো আমার থাকার একটা যায়গা লাগবে নাকী?

আমি:- তোমার কথা বুঝতেছিনা যা বলবে সোজা সুজি বলো?

তসিবা:- আমি তো বাংলা বলতেছি এখানে না বুঝার কি আছে?

আমি:- বুঝতে পারছি ঠিক আছে সমস্যা নেই তোমার যা ইচ্ছা করো তাতে আমার কিছু হবেনা। আর সরি তোমাকে এমন ভাবে ধরে আনার জন্য।

তসিবা:- সরি বলতে হবেনা আমি তো ছেলেটার মোবাইল নাম্বার রেখে দিয়েছি। আমাকে একটা মোবাইল কিনে দিবেন?

আমি:- তোমাকে দিবো মোবাইল কিনে আমার মাথা খারাপ নাকী। তখনি ভাবি দরজা নক করছে।

ভাবি:- সৌরভ তোমাকে আম্মাজান নিচে যেতে ডাকছে। সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।

আমি:- হ্যা ভাবি আসছি! আমি চলে আসবো তখনি তসিবা আমাকে বলে।

তসিবা:- আমাকে আজকে অনেক সুন্দর লাগছে আর কফি কালার চুড়িদারে নাকী অনেক ধারুন মানিয়েছে।

আমি:- কে বলছে তোমাকে একদম বিশ্রি দেখাচ্ছে।

তসিবা:- কিন্তু সাহেদ তো বলছে আমাকে অনেক সুন্দর লাগছে। যার চোখে আমাকে সুন্দর দেখায় সে আমাকে প্রকৃত ভালোবাসে।

আমি:- সাহেদটা আবার কে?

তসিবা:- ঐ আমার সাথে যে হেসে হেসে কথা বলছে। ওর নাম সাহেদ ছেলে সারাক্ষন আমার পিছু পিছু ঘুর ঘুর করছে।

আমি:- ভালোই যাক তাহলে তো আর তোমার চিন্তা নেই! আচ্ছা তাহলে আমি রিপার সাথে আংটি বদল করে নিবো? (তসিবা একটা চওড়া হাসি দিয়ে বলে)

তসিবা:- হ্যা যান মানা কে করছে? আমাকে কেনো জিজ্ঞেস করছেন আমি না করবো কেনো এখন তো আমাকে ভালোবাসার মানুষ পেয়ে গেছি।

আমি:- ঠিক আছে! তাহলে এক সাথে তোমাদের আংটি বদল করে নিতে।

তসিবা:- আমাকে নিয়ে এত চিন্তা করতে হবেনা যান দেরি হয়ে যাচ্ছে।

আমি:- ঠিক আছে তুমি যেহেতু বলছো তাহলে কি করে মিস করি। তসিবাকে রেখে আমি নিচে চলে এসেছি।

আম্মা:- সৌরভ তসিবার সাথে কথা শেষ হয়ছে? আর কি এমন জুরুরী কথা যে এখুনি বলতে হলো।

আমি:- দরকার ছিলো তাই বলেছি! এখন বলেন কি করতে হবে আমার অনেক ক্লান্ত লাগছে।

রিপার বাবা:- বাবা সৌরভ নাও রিপাকে আংটিটা পড়িয়ে দাও।

আমি:- হ্যা দেন! আংটিটা হাতে নিয়ে তসিবার দিকে তাকিয়েছি দেখি তসিবা সাহেদর সাথে দিব্যি গল্প করছে। আর তসিবাকে বেশ হাসি খুশি লাগছে।

রিপা:- সৌরভ তুমি ঠিক আছো তো? (রিপার কথা শুনে আমি বলতে ছিলাম যে রিপা আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারবোনা ঠিক তখনি ভাবি বলে)

ভাবি:- হ্যা ঠিক আছে মনে হচ্ছে কিছুটা নার্ভাস লাগছে। সৌরভ রিপাকে আংটিটা পড়িয়ে দাও।

আমি:- হ্যা দিচ্ছি! রিপাকে অবশেষে আংটিটা পড়িয়ে দিয়েছি। রিপা আমাকে আংটি পড়িয়ে দিয়েছে। সবাই অনেক খুশি হয়েছে আমি বার বার তসিবার দিকে দেখছি। দেখতে দেখতে অনুষ্টান শেষ হয়ে গেছে। রিপা তার বাবা মা, বোন সহ সবাই চলে গেছে। আমি রুমে এসে দেখি তসিবা তার পরনের গহনা ঘাটি খুলছে। আমি ফ্রেশ হয়ে এসে শুয়ে পরেছি কিছুক্ষণ পর তসিরা মলম আর ঔষধ নিয়ে এসেছে।

তসিবা:- মলমটা পিঠে লাগিয়ে দিবেন?

আমি:- পারবোনা তোমার প্রেমিক সাহেদকে বলো এসে লাগিয়ে যেতে।

তসিবা:- আমার কাছে তো মোবাইল নেই থাকলে ফোন করলে সাহেদ চলে আসবে নিশ্চয়ই।

আমি:- নাও আমার মোবাইল দিয়ে ফোন করো!( মনে মনে বলছি একবার নাম্বারটা পাই ওর গুষ্টি উদ্দার করবো)

তসিবা:- সরি আপনার মোবাইল দিয়ে ফোন করবোনা পরে যদি আপনি ফোন করে খারাপ ব্যাবহার করেন। আচ্ছা এখন কথা না বাড়িয়ে মলমটা লাগিয়ে দেন।

আমি:- তুমি আগের চাইতে অনেকটা চালাক হয়ে গেছো। দাও লাগিয়ে দিচ্ছি তসিবা ঘুরে বসেছে আমি মলম লাগিয়ে দিয়েছি। এখন আর এতটা দাগ নেই অনেকটা মুছে গেছে।

তসিবা:- জানেন সাহেদ আমাকে খুব পছন্দ করছে আর আমার অনেক প্রশংসা করছে। আমি নাকী দেখতে খুব সুন্দর আমার চুল গুলির উপর নাকী ফিদা হয়ে গেছে।(তসিবা বক বক করছে আর আমার ভিতরে জ্বলছে কানে তুলা দিয়ে শুয়ে পড়েছি)

আমি:- বক বক শেষ হলে এসে শুয়ে পড়। (তসিবা কি বলছে আমি স্পষ্ট বুঝিনি কিন্তু মনে হচ্ছে সেই একিই কথা বলছে। কিছুক্ষণ পরে দেখি তসিবা নিছে যায়গা করছে) তসিবা কি করছো নিছে বিছানা বিছানা করছো কেনো?

তসিবা:- এখন থেকে আমরা আলাদা করে শুইবো। সাহেদ আমাকে খুব বিশ্বাস করে আর সেই বিশ্বাসের অমর্যাদা করাটা ঠিক হবেনা। আর তাছাড়া কিছু দিনের মধ্যে আমারা দুজন দুজনকে ছেড়ে চলে যাবো তখন তো আলাদা ঘুমাতে হবে তাই আগে থেকে অব্যাশ করা ভালো।

আমি:- তোমার যা ইচ্ছা হয় করো আমি ঘুমালাম। চোখ বন্ধ করে রাখছি কিন্তু ঘুম তো আর আসছেনা কিছু একটা মিস করছি সেইটা হলো তসিবাকে। দুই মাস ধরে তসিবা বুকের উপর ঘুমাত এখন তো সে নিচে গিয়ে কি সুন্দর আরামছে ঘুমাচ্ছে। দূর আর পারবোনা যাই গিয়ে নিচে ওর পাশে শুয়ে পরি। তসিবার পাশে শুয়েছি তসিবা আমার উপড়ে পা তুলে দিয়েছে। আমি সুযোগে জড়িয়ে ধরেছি এবার খুব সহজে চোখে ঘুম চলে এসেছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে আলতু করে তসিবার কপালে চুুমু দিয়ে আমি ফ্রেশ হতে গেছি। নামায পড়তে যাওয়ার আগে তসিবাকে তুলে দিয়েছে।

তসিবা:- আমি সজাগ ছিলাম আজকের মত কিছু বলিনি এরপর যদি আমার পাশে এসে শুয়ে থাকেন তাহলে এর পরিনাম ভালো হবেনা।

আমি:- দুই মাসের অব্যাশ এত তাড়াতাড়ি বদলাবো কি করে তার জন্য তো কিছুটা সময় দিতে হবে নাকী?

তসিবা:- তাহলে রিপার কাছে চলে যাবেন তাও আমার পাশে আসবেন না। বলে তসিবা চলে গেছে। এই মেয়েটাকে নিয়ে কি যে করি দূর তাড়া তাড়ি নামায পড়তে যাই। নামায পড়ে কিছুটা হাটা হাটি করে এসেছি বাড়ীতে। আজকে তসিবাকে একটু বেশি অন্য রকম সুন্দর লাগছে কিন্তু তসিবা তো আমাকে পাত্তা দিচ্ছেনা।

আমি:- আম্মা আমি অফিসে যাচ্ছি আমার কাজ আছে জুরুরী!

আম্মা:- নাস্তা করে যা।

আমি:- নাহ করবোনা আচ্ছা গেলাম। তসিবা আমি অফিসে যাচ্ছি কিন্তু তসিবার কোনো খবর নেই। একদিনে তসিবা কি করে এতটা পাল্টে গেলো চিন্তা করতে করতে অফিসের জন্য রওনা হলাম। অফিসে এসেছি এসে নিজের মত করে কাজ করছি এমনি মোবাইলটা বেজে উঠেছে হাতে নিয়ে দেখি রিপা। রিসিব করেছি হ্যা রিপা বলো?

রিপা:- অফিস শেষে আমার সাথে দেখা করবে আজকে আমরা বাহিরে ডিনার করবো কেমন।

আমি:- আচ্ছা! ফোনটা কেটে দিয়েছি এই রিপাটা আমাকে ফকির করার ধান্ধা। রিপার থেকে তসিবা আমার জন্য পার্ফেক্ট হবে। কাজ গুলি শেষ করেছি আবার রিপা ফোন করেছে রিসিব করিনি কিছুক্ষণ পরে দেখি রিপা মেসেজ করে বলছে।

রিপা:- তোমার অফিসের নিচে দাঁড়িয়ে আছি কতক্ষণ সময় লাগবে তোমার?

আমি:- এই মেয়েটা তো আমাকে ফকির করার জন্য উঠে পরে লেগেছে। যাই আজকে একদম ভর্তা দিয়ে ডিনার করাবো। কাজ গুলি শেষ করে নিচে গেছি তখনি রিপা এসেছে।

রিপা:- সৌরভ চলো আমার খুব খিদা লাগছে!

আমি:- কেনো বাড়ীতে কিছু খাওনি?

রিপা:- মানে?

আমি:- কিছুনা মজা করেছি চলো। রিপাকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে গেছি রিপার অডার শুনে আমি মনে মনে রাক্ষসী ডাইনী ডেকে শেষ করে দিয়েছি। দুজনে ডিনার করলাম বিল দেখে মাথাটা ঘুরে গেছে। বিলটা দিয়ে রিপাকে নিয়ে তাড়াতাড়ি করে ওর বাড়ীতে ওকে নামিয়ে দিয়ে সোজা বাইক নিয়ে চলে এসেছি। বাড়ীতে এসে কলিং বেল বাজিয়েছি তখনি তসিবা এসে দরজা খুলে দিয়েছে। আমি ছোট করে একটা হাসি দিয়েছি কিন্তু তসিবা আমার দিকে না তাকিয়ে চলে গেছে। তসিবা সিঁড়ি দিয়ে উপরে যেতেছে আমি ওর পিছু পিছু যাচ্ছি যখনি রুমে গেছি তখনি তসিবা বলে।

তসিবা:- একটা জিনিস দেখবেন? (আমি অনেক আগ্রহো নিয়ে বলছি)

আমি:- হ্যা দেখবো। (তখনি তসিবা একটা দামী মোবাইল এনে আমাকে দেখাচ্ছে) মোবাইল পেলে কোথায়?

তসিবা:- পায়নি সাহেদ গিফট করছে আমার প্রথম ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে গিফট পেলাম। সাহেদ আমার সাথে কথা বলতে চাই তাই গিফট করছে। তখনি মোবাইলে ফোন এসেছে।

আমি:- কে ফোন করছে?

তসিবা:- আমার জানু বাবু সোনা সাহেদ মাই লাভ আপনি বসেন আমি একটু রোমান্টিক কথা বলে আসি। জানু উম্মা উম্মা ফোনে কিস করতে করতে তসিবা আমার সামনে থেকে বেড়িয়ে গেছে। তসিবার এমন কাজ দেখে আমি রিতিমত অবাক হয়ে যাচ্ছি! এইটা কি আমার বউ তসিবা নাকী তার জমজ বোন? মনের মাঝে একটা প্রশ্ন তৈরি হয়ে গেলো-------

To be continue--------
(আগের পর্বগুলো আমার টাইমলাইনে দেওয়া আছে। ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করে সাথেই থাকুন 💝 এবং সবাই এড করে নিন 💝)